ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

হাদিসে স্বপ্নের বর্ণনা
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৯, ১২:০০ এএম  (ভিজিট : ৭২৫)
স্বপ্ন সাধারণত সবাই দেখে। মানুষের কিছু স্বপ্ন অর্থহীন হলেও কিছু স্বপ্নের প্রভাব ও বাস্তবতা অনস্বীকার্য। বিশেষ করে মুমিনের জীবনের স্বপ্ন আলাদা তাৎপর্য বহন করে। বক্ষ্যমাণ লেখায় নবীজি (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামদের কিছু স্বপ্নের আলোচনা করা হবেÑ যা হাদিসের কিতাবে গ্রন্থিত হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি স্বপ্নে আমার হাতে দুটি সোনার চুড়ি দেখতে পেলাম। আমি ফুঁ দিতেই তা উড়ে চলে গেল। আমি এ চুড়িদ্বয়ের এ ব্যাখ্যা করেছি, নবুয়তের দুই মিথ্যা দাবিদারের আবির্ভাব হবে। তারা হলো, মুসায়লামা ও আনাসী। ইতিহাসের পাতায় এরা ছিল ভন্ড নবী।’ (ইবনে মাজা : ৩৯২২)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘উহুদ থেকে নবী (সা.) ফেরার পথে এক ব্যক্তি তার নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি স্বপ্নে একটি ছায়াদার মেঘ দেখেছি, যা থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় ঘি ও মধু পড়ছিল! লোকদের দেখলাম, তারা হাতে তুলে নিয়ে তা পান করছে। কেউ বেশি পাচ্ছে এবং কেউ কম পাচ্ছে।
আমি আরও দেখলাম, আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত একটি রশি ঝুলছে। আমি দেখলাম, আপনি তা ধরে ওপরে উঠে গেছেন। আপনার পর আরেকজন তা ধরে ওপরে উঠে গেল, তারপরে আরেকজন তা ধরে ওপরে উঠে গেল। তারপরে আরেকজন তা ধরলে রশিটি ছিঁড়ে গেল। আবার তা জোড়া লেগে গেল এবং সেও তা ধরে ওপরে উঠে গেল। আবু বকর (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে দিন। তিনি বললেন, আচ্ছা, তুমি এর ব্যাখ্যা করো।
আবু বকর (রা.) বলেন, মেঘখÐ হলো ইসলামের ছায়া। পতিত ঘি ও মধু হলো কোরআন থেকে বেশি ও কম লাভকারী। আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত ঝুলন্ত রশি হলো সেই মহাসত্য যার ওপর আপনি প্রতিষ্ঠিত। আপনি রশিটি ধরলেন এবং আল্লাহ আপনাকে ওপরে উঠিয়ে নিলেন। আপনার পর তা আরেকজন ধরবে এবং আল্লাহ তাকে ওপরে তুলে নেবেন। তারপরে আরেকজন ধরবে, সেও তা ধরে ওপরে উঠে যাবে। এরপর আরেকজন রশিটি ধরবে এবং তা ছিঁড়ে যাবে। আবার তা জোড়া লাগবে এবং সেও তা ধরে ওপরে উঠে যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, তুমি কিছু তো ঠিক বলেছ এবং কিছু বলেছ ভুল। আবু বকর (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আপনাকে শপথ দিয়ে বলছি, আপনি আমাকে বলে দিন, আমি কোথায় ঠিক করেছি এবং কোথায় ভুল করেছি। নবী (সা.) বলেন, হে আবু বকর! শপথ দিয়ে বলো না। (বুখারি : ৭৪৬; মুসলিম : ২২৬৯ ও তিরমিজি: ২২৯৩; ইবনে মাজা : ৩৯১৮)
হজরত আবদুুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) যুগে আমি ছিলাম অবিবাহিত যুবক। আমি মসজিদেই রাত কাটাতাম। আমাদের কেউ কোনো স্বপ্ন দেখলে সে তা নবী (সা) এর নিকট বর্ণনা করত। আমি মনে মনে বললাম, হে আল্লাহ! তোমার নিকট আমার জন্য কোনো কল্যাণ থাকলে তা আমাকে স্বপ্নে দেখাও যার ব্যাখ্যা নবী (সা.) আমাকে বলে দেবেন।
আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। আমি স্বপ্নে আমার নিকট দুজন ফেরেশতাকে আসতে দেখলাম। তারা আমাকে নিয়ে রওয়ানা হলেন, পথিমধ্যে আরেকজন ফেরেশতা তাদের সঙ্গে মিলিত হন। তিনি বলেন, তুমি ভয় পেয়ো না। ফেরেশতাদ্বয় আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলল। তা ছিল একটি ক‚পের মতো। তাতে আমি কিছু সংখ্যক লোক দেখতে পেলাম, যাদের কতককে আমি চিনতে পেরেছি।
তারা আমাকে ডান দিকে নিয়ে গেল। ভোর হলে আমি বিষয়টি হাফসা (রা.) কে বললাম। হাফসা (রা.) তা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট বললেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ একজন সৎ লোক। সে যদি রাতে অধিক নামাজ পড়ত। যুহরি (রা.) বলেন, তখন থেকে আবদুল্লাহ (রা.) রাতে বেশি বেশি নামাজ পড়তেন।’ (বুখারি : ৪৪০;
মুসলিম : ৪৫২৮)
লেখক : প্রাবন্ধিক




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close