ই-পেপার বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কাঠের সেতুই ১০ গ্রামের মানুষের ভরসা
গোবিন্দগঞ্জে জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৯, ৫:১০ পিএম  (ভিজিট : ২২৩)

বিকল্প পথ অনেক দূর। তাই নদী পারাপারে জরাজীর্ণ কাঠের সেতুই একমাত্র ভরসা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের পুরানদহ গ্রামসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দাদের।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নে আমিনের ঘাটে নলেয়া নদীর ওপর একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু বানানো হয়েছিল ৩ বছর আগে। নদী পারাপারের জন্য ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেই সেতুটিই এখনো এলাকাবাসীর একমাত্র অবলম্বন। দেশজুড়ে নানা উন্নয়নের ভিড়ে এই সেতুটি চাপা পড়ে আছে। এলাকাবাসীর আক্ষেপ আর চিৎকার-চেঁচামেচি কারও কানে ঢুকছে না।

নড়বড়ে কাঠের সেতু। তার অনেক জায়গাতেই লম্বা ফাটল। তবু স্কুল, কলেজ বা অন্য কোথাও যেতে হলে নলেয়া নদীর ওপর এই ভাঙাচোরা সেতুই একমাত্র ভরসা ১০ গ্রামের বাসিন্দাদের। এমন কী হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ারও একমাত্র পথ এই সেতু। বিকল্প রাস্তা আছে। কিন্তু সেখান দিয়ে যেতে ঘুরতে হয় বেশ খানিকটা পথ। তাই তিন বছর ধরে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়েই যাতায়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন পুরানদহ গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। প্রায়ই তাঁদের দুর্ঘটনার মুখেও পড়তে হয়।

বছর খানেক আগেই এই সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। কাঠ পচে গেছে, কোথাও কোথাও ভেঙে ফাঁকা হয়ে গেছে। এরপরও লোকজনকে এই সেতুর ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে। ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন আর জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা বদল হলেও তিন বছর আগে তৈরি অস্থায়ী কাঠের সেতুর হাল বদলায়নি। দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতুর দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। বদলে শুধুই আশ্বাস পেয়েছেন তাঁরা।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নিজের খরচে ৩ বছর আগে আমিনের ঘাটে যে অস্থায়ী সেতুটি বানিয়েছিল, যা এখন আর ব্যবহারের উপযোগী নেই, সেখানে একটি পাকা সেতু হোক— এটাই এলাকাবাসীর দাবি। গত ৩ বছর তারা বিষয়টির প্রতি প্রশাসনের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে আসছেন। স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

পুরানদহ গ্রামের মেঘারচর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, জরাজীর্ণ কাঠের সেতুটি পারাপারে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের। এই প্রতিক‚লতার মধ্য দিয়ে নিয়মিত গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া উপজেলা সদরের ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাতায়াত, মামলা মোকদ্দমাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় যেকোনো কাজে এই সেতুর উপর দিয়েই নলেয়া নদী পাড়ের মানুষদের যেতে হয় উপজেলা সদরে। রিক্সা-ভ্যানসহ হালকা যানবাহন তো দ‚রের কথা পায়ে হেঁটে ঝুঁকিপ‚র্ণভাবে সেতুটি পার হতে হয় বলে জানালেন এলাকার ভূক্তভোগী মানুষগুলো।

এ বিষয়ে নাকাইহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, এলাকার মানুষের চলাচলের এ দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় নলেয়া নদীর উপর সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংসদ সুত্রে জানা গেছে, আমিনের ঘাটে নলেয়া নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন তৈরী করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। স্বল্পসময়ের মধ্যে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে দেশজুড়ে উন্নয়ন চলছে। সেই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে ভাঙাচোরা এই সেতুতেও। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও আশায় আছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের পুরানদহ গ্রামসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দারা।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close