ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

নিষেধাজ্ঞা শেষে বরিশালে ইলিশ আর ইলিশ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:০৮ পিএম  (ভিজিট : ৭০৪)
ইলিশ আর ইলিশ। চারদিকে শুধু ইলিশ। সাথে দেখা মিলছে কাঙ্খিত রুপালি ইলিশেরও। বরিশাল একমাত্র মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পোর্টরোডের চিত্র এখন এমনটাই।

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার ইলিশ আমদানি ও দীর্ঘদিনের নিস্তব্ধ পোর্টরোড ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে এখন সরগরম। কর্মব্যস্ত শ্রমিকদের কেউ মাছ সংরক্ষণে ব্যস্ত আবার কেই বরিশালের বাইরে প্রেরণের জন্য ট্রাকে তুলছেন।

প্রথমদিনে বিপুল পরিমাণ ইলিশের আমদানিতে তুষ্ট আড়ৎ মালিকেরা  সময় পাড় করছেন ব্যস্ততায়। এই অবস্থার কথা শোনা এই অঞ্চলের  পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার অবতরণ কেন্দ্রগুলোতেও। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে- দীর্ঘদিনের এই অরোধের পরেও অধিকাংশ ইলিশের পেটভর্তি পরিপক্ক ডিম লক্ষ্য করা গেছে। এই ঘটনায় সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দুষছেন ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবীরা।

যদিও বরিশাল মৎস্য বিভাগ বলছে এতে চিন্তার কিছু নেই।  সরেজমিন পোর্টরোডে বৃহস্পতিবার খুব ভোরে ঘুরে দেখা যায়- ৬
থেকে ৯শ গ্রামের ইলিশ মণপ্রতি ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা, এককেজি ওজনের ইলিশ ৩০ হাজার টাকা, ১২শ গ্রামের ওপরে ইলিশ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা পাইকারি মুল্যে বিক্রি হচ্ছে।


এখানকার মৎস ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন সময়ের আলোকে জানান, একসঙ্গে প্রথমদিনে এতো মাছ ধরা পড়ায় জেলেরা যেমন খুশি,
তেমনি খুশি ব্যবসায়ীরাও। এভাবে ইলিশের আমদানি থাকলে সামনের দিনগুলোতে জেলে-ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের ভালো কাটবে। পাশাপাশি ক্ষতিও পুষিয়ে উঠতে তেমন একটা বেগ পেতে হবে না। এছাড়া ২/৪ দিন পরে সাগরের ইলিশগুলো আসলে এই অঞ্চলের অবতরণ কেন্দ্র ও বাজারগুলো আরও জমে উঠবে। সেই ইলিশের দামও সর্ব শ্রেণির মানুষের ক্রম কক্ষমতার নাগালে চলে আসবে। তবে আমদানিরত ইলিশের পেটে পরিপক্ক ডিম দেখে এই ব্যবসায়িও কিছু হতাশ।

একই চিত্র দেখে এই অবতরণ কেন্দ্রটির অপরাপর ব্যবসায়ীরাও অনুরুপভাবে হতাশা জানানোর পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিমত- ইলিশ প্রজনন মৌসুম পরিবর্তন করায় কার্যকারিতা হারিয়েছে গত ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ী মহল থেকে দাবি উঠেছে- নতুন করে গবেষণার মাধ্যমে প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞার সময় পুনর্র্নিধারণ করার। তবে জেলে ব্যবসায়িদের এমন দাবি মানতে নারাজ মৎস্য বিভাগ।

এই প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা (হিলসা) মৎস বিমল চন্দ্র দাস যুক্তি দেখিয়ে বলছেন- ইলিশ সারা বছরই ডিম ছাড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি ডিম ছাড়ে আশ্বিনের পূর্ণিমায়। আশ্বিনের অমাবশ্যায় পানি বৃদ্ধি পেলে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্যসাগর ছেড়ে মিঠাপানির দিকে ছুটতে থাকে। ঠিক এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আশ্বিনের অমাবশ্যার তিন সপ্তাহ আগে থেকে শুরু করে পূর্ণিমার পর আরও চার দিন, অর্থাৎ মোট ২২ দিন ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পাঁচ বছরে দেশে ইলিশ উৎপাদন তিনগুণ বেড়েছে।


একই চিত্র এবারও পরিলক্ষিত হচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন- নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনে যে পরিমাণ ইলিশ বাজারে এসেছে
তাতে ব্যবসায়ী জেলেসহ সকলে খুশি। তবে আগামী ২/৪দিন পরে ইলিশের আমদানি আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে সাগরের ইলিশগুলো সরবরাহ শুরু হয়ে বাজারগুলো আরও সরগরম হয়ে উঠবে এবং সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close