ই-পেপার শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

সারা দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ পুনঃখনন শুরু হয়েছে
এলাকাবাসীর বাধার মুখে কয়েকটি নৌপথে ড্রেজিং করা যাচ্ছে না
প্রকাশ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম আপডেট: ১৪.১২.২০১৯ ১১:৩৮ পিএম  (ভিজিট : ১৬০)
নৌ যাতায়াত ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সারা দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ পুনঃখনন শুরু হয়েছে। ১৭৮টি নদীর ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের পাশাপাশি নদী কমিশন গঠনসহ নদী দখল ও দূষণ রোধে উচ্ছেদ কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ) সংশোধিত প্রকল্পে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে ২৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথের নাব্য উন্নয়ন করা হচ্ছে। তবে নরসিংদী জেলার মনোহরদী ও বেলাবো উপজেলার ভাওয়ালের চর এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদে এবং সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছাতক-ভোলাগঞ্জ নৌপথের চলতি নদীর তেলীখাল বাজারের পাশে এলাকাবাসীর বাধার মুখে ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং (প্রথম পর্যায়ে : ২৪টি নৌপথ) দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌপথে মোট ৯ কোটি ৯৭ লাখ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে ২৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথের নাব্য উন্নয়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে ৪ কোটি ৭৪ লাখ ঘনমিটার, বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে ৭০ লাখ ৭০ হাজার ঘনমিটার এবং এক্সকাভেটর দ্বারা প্রায় ২৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করে ১১৮০ কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হয়েছে। ২৪টি নৌরুটের মধ্যে ৮টি রুটের কাজ সমাপ্ত এবং ১৬টি রুটের কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রকল্পভুক্ত নদীগুলো হলো

এমজি চ্যানেল, খগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, তিতাস, সুরমা, বাউলাই, নতুন নদী, রক্তি, রকশা নালা, মগড়া, কংস, ভোগাই-কংস, বুড়ি, ইছামতী, কর্ণতলী, পালরদী, ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, মধুমতী, ভৈরব, আত্রাই, দুধকুমার, নরসিংদী জেলার পুরনো ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ নদ। প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ১৯২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত।

বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) সাইদুর রহমান জানান, এ প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এমজি চ্যানেল ড্রেজিং করে ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এ চ্যানেল দিয়ে ১,৩৮,০২৪টি ৮ থেকে ১৪ ফুট ড্রাফটের ভেসেল চলাচল করেছে। বর্তমানে এ চ্যানেলে সর্বনিম্ন ১২ ফুট এবং জোয়ারের সময় ২০ ফুট পর্যন্ত পানির গভীরতা থাকে এবং প্রস্থ ২০০ থেকে ৩০০ ফুট রয়েছে। নাব্য সঙ্কটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতী, কর্ণতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিংয়ে নাব্য ফিরিয়ে এনে এখন সারা বছর চলাচল করছে। ভৈরব-ছাতক নৌপথে শুকনা মৌসুমে হাফলোড দিয়ে কার্গো চলাচল করত।

তবে ড্রেজিংয়ের পর সারা বছর ফুললোডে কার্গো চলাচল করছে। প্রকল্পের আওতায় নৌপথগুলো ড্রেজিং করে এ পর্যন্ত প্রায় ১২০০ কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে ৫০০টির মতো শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিচু জায়গা, খেলার মাঠ, ঈদগাঁ মাঠ, স্টেডিয়াম, কবরস্থান, গির্জা-মন্দির তীর্থস্থান ইত্যাদি ভরাট করা হয়েছে। হাওর অঞ্চলে যেমন তাহেরপুর, বিশ্বম্বরপুর, মদন, নিকলি, গাগলাজোড়-ধর্মপাশা-মোহনগঞ্জ, বাঞ্ছারামপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গ্রামের গরিব মানুষ ও গবাদি পশুর বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অন্যদিকে নরসিংদী জেলার মনোহরদী ও বেলাবো উপজেলার ভাওয়ালের চর এলাকায় জনগণের বাধার মুখে আড়িয়াল খাঁ নদের ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মানিকগঞ্জ জেলার কালিগঙ্গা নদীতে খনন কাজে বাধা দেওয়ায় কাজ এক বছর বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি ড্রেজিং কাজ শুরু হয়েছে। নওগাঁ জেলার আত্রাই নদীতে বালুমহাল ইজারা, মাটি কর্দমাক্ত ড্রেজারের পাইপের মধ্যে আটকে যাওয়া এবং মাটি ফেলার জায়গার স্বল্পতা থাকায় নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ড্রেজিং কাজ বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছাতক-ভোলাগঞ্জ নৌপথের চলতি নদীর তেলীখাল বাজারের পাশে এলাকাবাসীর বাধার মুখে ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো নদী খননে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি, তারা পরিকল্পিতভাবে নৌপথকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তারা কোনো রকমে নামকাওয়াস্তে ড্রেজিং করেছে, ড্রেজিংয়ের নামে তখন দুর্নীতি হয়েছে। তাই নৌপথ সচল রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার ড্রেজিংয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। নৌপথ সারা বছর সচল রাখার জন্য এখন পরিকল্পনা অনুযায়ী সমন্বিতভাবে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌপথগুলো সচল করা হচ্ছে।





সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close