প্রকাশ: শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১১:০৮ পিএম (ভিজিট : ১২১)
করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে গত ছয় মাস ধরে বন্ধ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় (ঢাবি)। এরই মধ্যে অনলাইন ক্লাস শুরুর পর আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও জটিলতা নিরসন করতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। অনলাইনে নেওয়া ক্লাসগুলোর কার্যকরিতা ও ফলপ্রসূতা নিয়েও অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। স্থবির এই সময়ের কারণে সেশনজটের দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরেছে শিক্ষার্থীদের।
এ পরিস্থিতিতে সেশনজটের বিষয়টি নিয়ে ভাবছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। এ ক্ষেত্রে বিশ^বিদ্যালয় খুললে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত বিভাগগুলোতে দুই সেমিস্টার এক করে চলমান সেশনটি সংক্ষিপ্ত আকারে শেষ করা সম্ভব বলে মনে করছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাৎসরিক পদ্ধতিতে পরিচালিত বিভাগগুলোতেও সেশন সংক্ষিপ্ত করা সম্ভব বলে মনে করছে তারা। তবে তাড়াহুড়ো না করে ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলে ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সে হিসাবে এরই মধ্যে বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে, যা একটি পূর্ণ সেমিস্টার সম্পন্ন করার সময়ের সমান। এদিকে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় খুব দ্রুতই বিশ^বিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা নেই কর্তৃপক্ষের। তাই স্বাভাবিকভাবেই ছয় মাস থেকে পূর্ণ এক বছরের সেশন জটে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এমন ভয় কাজ করছে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে মোট ৪৯টি বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু আছে। এই পদ্ধতিতে প্রতি ছয় মাসে একবার করে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হয়। এভাবে আটটি সেমিস্টারে স্নাতক ও দুই সেমিস্টারে স্নাতকোত্তর করতে হয়। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে চলমান সেশনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরবর্তী সেশনে উল্লেখযোগ্য একটি সময় ব্যয় হবে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক একেএম মাকসুদ কামাল জানান, সেশনজট কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলাপ-আলোচনা চলছে। অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোতে ক্লাস নেওয়া, বাৎসরিক বন্ধের দিনগুলোকে কমিয়ে নিয়ে আসাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ রয়েছে আলোচনায়। তিনি বলেন, আরও একটি সুযোগ আমাদের আছে।
চলমান সেশনটিকে শেষ করার জন্য সব বিভাগের ক্ষেত্রেই এই সেশনের দুটো সেমিস্টারকে এক করে অনেকটা বাৎসরিক পদ্ধতিতে সংক্ষিপ্ত আকারে শেষ করা যেতে পারে।
তবে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ মনে করেন, তাড়াহুড়ো না করে ধৈর্য ধরাই এখন আসল কাজ। বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতর কিছু ত্যাগ করা অযৌক্তিক হবে না বলে মত তার। তিনি বলেন, এই ধরনের সমস্যা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য নতুন নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এক বছর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এরপরও অনেক ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয়েছে।
কিন্তু পরে আমরা ঠিকই সেশন জট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। এমন ঘটনাও আছে, দুটো শিক্ষাবর্ষ এক করে ভর্তি করানো হয়েছে। যেমন ১৯৭৬ ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। জীবন মূল্যবান। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
ষ শিক্ষার আলো প্রতিবেদন