ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরেকদফা ছুটি বাড়ল
সময়োচিত সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১১:২৫ পিএম  (ভিজিট : ১১৬)
 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি আরও একদফা বাড়ানো হয়েছে। এবার ছুটি আরও ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। দেশে করোনা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় ইতঃপূর্বে এই ছুটি কয়েকদফা বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছিল। এখন তা বাড়িয়ে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। করোনার বাস্তবতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
থাকায় প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ঝুঁকিতে পড়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে পড়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি। আর মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সোয়া কোটির কিছু বেশি। বাকিরা অন্য স্তরে পড়ছে। এমন অবস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জিজ্ঞাসা ছিলÑ ছুটি কি আরও বাড়বে, নাকি খুলে দেওয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আবার ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা এলো। এদিন শিক্ষা  মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ছুটির সিদ্ধান্ত জানান।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা চলছে। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর। বিশেষ করে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি না নিয়ে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করা হবে। এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা পুরোটাই শেষ করতে পেরেছিল। যে কারণে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া গেছে। তবে আগামী বছরের ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের আট মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনার বিঘœ ঘটেছে। সে কথা চিন্তা করে তাদের নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করার জন্যই এ পদক্ষেপ।
করোনার কারণে এবার বই উৎসব না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, উৎসবের বিকল্প ভাবা হচ্ছে। কেননা উৎসব করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে চায় না সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে অর্থাৎ শীত মৌসুমে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে।
প্রায় দুই মাস ধরে দেশে পরীক্ষার তুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে আটকে ছিল। রোগী শনাক্তের হার সম্প্রতি কিছুটা কমেছিল।
কিন্তু এই হার আবার বাড়তে শুরু করেছে। ১৬ দিন পর বুধবার রোগী শনাক্তের হার আবার ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ১২ হাজার ৩৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৯৩ জন রোগী শনাক্ত হয়। পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১২ দশমিক শূন্য আট শতাংশ। এ থেকে অনুমান করা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাব আবার বাড়তে শুরু করেছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে করোনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। করোনার সংক্রমণ রোধ করতে কোনো কোনো দেশে রাতে কারফিউ জারি করা হচ্ছে এবং লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
আমাদের প্রত্যাশা, বৈশি^ক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি মাথায় রেখেই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাসহ অন্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বিভিন্ন মহলের নানা আলোচনা ও সমালোচনা সত্তে¡ও সরকার এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি, চার কোটি শিক্ষার্থী ও কয়েক লাখ শিক্ষককে করোনা ঝুঁকির মধ্যে ফেলেনি। সংশ্লিষ্টদের সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আগামী দিনেও সরকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেবে এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close