মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বরং সামনের দিনগুলোতে আরও গভীরভাবে কাজ করার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনে দুই দেশের সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন হবে না। আমরা মনে করি, কিছু কমন গ্রাউন্ডে আরও গভীরভাবে কাজ করার সুযোগ হবে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাষন, মুক্তবাণিজ্য ইত্যদি ইস্যুতে আমাদের যে প্রত্যাশা ও আমাদের মতো দেশগুলোর যে প্রত্যাশা, সেই অনুযায়ী নতুন প্রশাসন কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রকে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, এই বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্র আরও কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হবে। এবং আমার মনে হয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেটি নিশ্চিত হয়েছে। আমার মনে হয় এটি আশাপ্রদ উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন বার্ত পাঠিয়েছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বিষয় বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী তার চিঠিতে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন এবং সেজন্য বিশেষভাবে কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এছাড়া দুই জনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনে যে পরিবর্তনই হোক না কেন, কোনও খুনিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না, এটি আমাদের দাবি অতীতেও ছিল এবং সামনের দিনগুলোতেও থাকবে এবং আরও জোরালো হবে। শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্কিন নতুন প্রশাসন আমাদের এই দাবি ও বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। এই আহ্বানটুকু আমরা সবসময়ে করে যাবো, যতদিন পর্যন্ত সেই খুনিকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে আইনের মুখোমুখি করা হবে।
ইন্দো-প্যাসিফিকের সঙ্গে নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিকের অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ জড়িত। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের পক্ষে এই ভৌগোলিক অবস্থানকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হচ্ছে শেখ হাসিনার পররাষ্ট্র নীতি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অবাধ প্রবেশাধিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সক্ষমতা অনেক বেশি এবং তৈরি পোশাক এখন বিদেশিদের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি কোনও ধরনের শুল্ক বা অশুল্ক বাধা দিয়ে আটকে রাখার ক্ষমতা নেই। আমরা যে দক্ষতা ও মূল্যের যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও পণ্যের মান যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেটিতে আমরা আতœবিশ্বাসী। বিশ্ববাজারে এটি যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, সেটি আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর নির্বাচনে জো বাইডেন তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেন।