যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
অলাভজনক সংস্থা ফার্স্ট গেøাবাল আয়োজিত আন্তর্জাতিক রোবটিকস প্রতিযোগিতায়
চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ১৭৪টি দেশের এই প্রতিযোগিতায় লাল-সবুজের
প্রতিনিধিত্ব করেছে সুজয়ের দল। এই প্রতিযোগিতা
স্কুল-কলেজ পর্যায়ের
শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয়। ৩১ অক্টোবর অনলাইনে প্রতিযোগিতার সমাপনী
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বড় এই অর্জনে ছোটদের দলটির কাজের
আগ্রহ আরও বেড়ে গেছে।
বিজয়ী দলের সদস্যরা হচ্ছেনÑ রাজিন আলী (দ্বাদশ
শ্রেণি, স্যার জন উইলসন স্কুল), সুজয় মাহমুদ (একাদশ শ্রেণি, ম্যানগ্রোভ
স্কুল), মাহি জারিফ (দশম শ্রেণি, ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল), শাহরিয়ার
সীমান্ত (দশম শ্রেণি, ডিপিএস এসটিএস স্কুল), আবরার জাওয়াদ (দশম শ্রেণি,
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ), আয়মান রহমান (অষ্টম শ্রেণি,
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ), বিয়াঙ্কা হাসান (দ্বাদশ
শ্রেণি, ধানমন্ডি টিউটোরিয়াল স্কুল), আরীবাহ নাওয়ার আনোয়ার (অষ্টম শ্রেণি,
সাউথ ব্রিজ স্কুল), ফাইরুজ হাফিজ ফারিন (দ্বাদশ শ্রেণি, মাস্টারমাইন্ড
স্কুল) ও জাহরা চৌধুরী (অষ্টম শ্রেণি, সানবিমস স্কুল)। ২০১৭ সাল থেকে
ফার্স্ট গেøাবালের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে এই
ছেলেমেয়েরা। শুরুতে তেমন ভালো ফল আসেনি। প্রথম বছর হয়েছিল ৮৭তম। ২০১৮ সালে
স্থান হয়েছিল ১০০-এর পরে। ২০১৯ সালে সপ্তম। আর এ বছর বাজিমাত।
এবারের
প্রতিযোগিতায় ছিল পানিতে ভেসে থাকার বিশেষ এক যন্ত্র। যেটি ছোট বাচ্চাদের
পানিতে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। এটি গলায় লকেটের মতো পরতে হয়।
লকেটের অংশটি পানির সংস্পর্শে এলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফুলে বেলুনের আকার ধারণ
করে। ফলে লকেট গলায় থাকলে শিশু ভেসে থাকবে। একই সঙ্গে ওই শিশুর অবস্থান
জানিয়ে অভিভাবকের মোবাইল ফোনে একটি বার্তা পৌঁছে যাবে।
বিজয়ী দলের সুজয়
জানায়, প্রথম থেকেই আমরা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভালো পারতাম। তবে
যান্ত্রিক দিক থেকে বেশ পিছিয়ে ছিলাম। গত দুই বছর এই অংশে বেশি জোর দিয়েছি।
আর অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীদের দেখেও নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। দলের
সবার প্রোগ্রামিং, অ্যানিমেশন, রোবটিকস শেখার শুরু দ্য টেক একাডেমি নামে
একটি প্রতিষ্ঠানে। বিজয়ী দলটির সদস্যদের কাছাকাছি বয়সের আরও ৬০ জন
ছেলেমেয়ের রোবটিকসের হাতেখড়ি হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। মজার ছলে ভিডিও গেমের
মাধ্যমে স্কুলপড়ুয়াদের এসব বিষয় শেখায় দ্য টেক একাডেমি। দ্য টেক একাডেমির
অন্যতম প্রশিক্ষক শোয়েব মির্জা জানান, প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত
যন্ত্রপাতির কলাকৌশল থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন তারা। যেমন
সেলাই মেশিনের প্রযুক্তি থেকে ধারণা নিয়ে এমন এক ধরনের রোবট বানিয়েছেন,
যার সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কলকারখানায় বিভিন্ন পণ্য স্থানান্তর করা যাবে।
২০১৭ সালে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক এই রোবটিকস প্রতিযোগিতায় প্রতি বছরই
শতাধিক দেশ অংশ নেয়। মূলত অলিম্পিকের আদলে প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হয়।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো তাদের একটি করে প্রতিনিধিদল পাঠায়। তাই
প্রতিযোগিতাটি হাইস্কুল পর্যায়ের রোবটিকস অলিম্পিক হিসেবেই পরিচিত।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে আগ্রহী তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতেই
ফার্স্ট গেøাবালের এই আয়োজন। বিশে^র যেকোনো দেশের ১৪-১৮ বছর বয়সি
শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে। এর আগের প্রতিযোগিতাগুলো হয়েছিল
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও দুবাইয়ে। তবে এবার করোনা মহামারির কারণে পুরো
প্রতিযোগিতা মঞ্চ অনলাইনে। প্রায় বছর চারেক ধরে বিজয়ী দলটির বেশিরভাগ সদস্য
একসঙ্গে প্রোগ্রামিং, রোবটিকস ইত্যাদি শিখছে।
ষ