স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এলপিজির মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রবিধানমালা প্রণয়ন ও এক রেগুলেটরির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণয়ের সুপারিশের পাশাপাশি সাশ্রয়ী মূলে এলপিজি সরবরাহে আমদানি পর্যায়ে ২৫ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
জানা যায়, অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এ সংক্রান্ত সুপারিশ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জমা দিয়েছে কমিশন। এই তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম সচিব ড. মুহা. শের আলী।
শের আলী বলেন, আমরা চেয়েছিলাম প্রাইস নির্ধারণ করার জন্য। কিন্তু বিইআরসি দিয়েছে প্রাইসিং ফর্মুলা। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় বিশ্লেষণ করে দেখছে, তারপর সিদ্ধান্ত নেবে। গ্রিন এনার্জি হিসেবে পরিচিত এলপিজি জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং এর ব্যবহার বাড়ানোর জন্য এলপিজিতে ভর্তুকির সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ভাবনা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মুহা. শের আলী বলেন, মন্ত্রণালয়ের বিশ্লেষণ করছে এ বিষয়ে এখনই কিছু বলার সময় হয়নি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, এলপিজির বাজার স্থিতিশীল নয়। সে কারণে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকাসহ এশীয় অঞ্চলের দেশসমূহ সৌদি আরবকে নির্ধারিত প্রতিমাসের দর স্ব স্ব দেশের এলপিজির দর নির্ধারণের সূচক বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশেও এমন নিয়ম ফলো করার পক্ষে, এ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দর নির্ধারণের সুযোগ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
বর্তমানে একেক কোম্পানি একেক মিশ্রণে বাজারজাত করছে। এ বিষয়ে কমিশন মনে করছে, বাংলাদেশের একশ বছরের তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪৫ ডিগ্রি, সর্বনিম্ন ২.৬ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। তাপমাত্রা অনুযায়ী গৃহস্থালী ও যানবাহনে ব্যবহারের প্রপেন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ এবং বিউটেন ৭০ থেকে ৬০ শতাংশ উপযোগী হবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাদ্রাজ এবং পশ্চিমবঙ্গে এলপিজি সরবরাহে প্রতি টনে খরচ পড়ছে ৫০ থেকে ৬০ ডলার। একই পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশে আনতে খরচ পড়ছে ১০০ থেকে ১১০ ডলার। বিশাল তারতম্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলাদেশে ছোটো জাহাজে আনা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বিক্রির ওপর নির্ভর করে কম পরিমাণে আনছে এতে করে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বেশি আনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হচ্ছে নাব্যতা সংকট, অনেকের স্টোরেজে ক্যাপাসিটি নেই, আবার দীর্ঘদিন এলপিজি অবিক্রিত থাকায় বিনিয়োগ পড়ে থাকছে। সে কারণে নাব্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহারেও অনেকের অনীহা লক্ষ্যণীয়।
ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতারা একাধিক কোম্পানির সিলিন্ডার বাজারজাত করছে। এতে অপারেটরের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এতে সহজেই দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারছে, আবার ওজনে কম দেওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এজন্য নির্দিষ্ট কোম্পানির সিলিন্ডার বিক্রির বিধান করার পক্ষে মত দিয়েছে বিইআরসি।