সাংবাদিক পরিচয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি ও প্রতারণায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের মূল হোতা নজরুল ইসলাম ও তার এক সহযোগী আব্দুর রবকে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। এই চক্রের অত্যাচরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল টঙ্গী পূর্ব থানার দত্তপাড়া রসুলবাগ এলাকার জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, নজরুল দীর্ঘদিন এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও
এলাকার নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। কেউ এলাকায় জমি কিনলে বা বাড়ি করলে সে দলবল নিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করত। চাঁদা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করত। নারীদের ওপরও অত্যাচার চালাত। শুক্রবার ভুক্তভোগীরা থানায় পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম জানান, নজরুল নিজেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিত। সে এলাকায় আচার বিক্রেতা থেকে শুরু করে মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদেরও সাংবাদিকতার কার্ড বানিয়ে দিয়েছে। নাম না জানা আরও অনেক ভুয়া সাংবাদিক আছে তার দলে। এরা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও কলকারখানায় চাঁদার জন্য হানা দেয়। এদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় বাড়িওয়ালারা বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় রসুলবাগের আচারপট্টিতে জরুরি আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা চলাকালে কথিত সাংবাদিক নজরুলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সভায় হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয়দের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নজরুলকে একটি লম্বা ছোড়া হাতে নিয়ে তৎপর দেখা গেছে। হামলায় বেশ কয়েকজন বাড়িওয়ালা আহত হয়। এ হামলায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে চারদিক ঘেরাও দিয়ে নজরুল ও তার সহযোগী আব্দুর রবকে ধরে তারা পুলিশে সোপর্দ করে। অন্যদিকে এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়।
এদিকে হামলায় আহতদের মধ্যে আব্দুল মান্নান দেওয়ান বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। মান্নান দেওয়ান জানান, নজরুল সাংবাদিক পরিচয়ে দলবল নিয়ে তার কারখানায় ঢুকে তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেছিল। এ বিষয়ে জিএমপি দক্ষিণের এডিসি শাহাদাৎ হোসেন জানান, এলাকার প্রত্যেক ভুক্তভোগীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।