ষ বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর বদলগাছীর কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পিয়ন ওয়াহেদুল ইসলাম লিটন ২৫ বছর ধরে কর্মস্থলে না থেকেও চাকরিতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেন কলেজ অধ্যক্ষ নিজেই! কলেজের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী এমন অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে টানা ছয় কর্মদিবস কলেজে গিয়েও অফিসের তালা কখনও খোলা পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে উপজেলার কোলা ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী কোলাহাটের পূর্ব পাশে প্রতিষ্ঠিত হয় কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ। পিয়ন পদে চাকরি দেওয়ার শর্তে কলেজে জমি দান করেন ওয়াহেদুল ইসলাম লিটন। তিনি কোলা সরকারপাড়ার ওয়ারেছ আলী সরকারের ছেলে। ১৯৯৫ সাল থেকে আজ অবধি কলেজে না এসেই বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন লিটন। কিন্তু তার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে নিয়মিত কর্মচারীদের মতোই। ২-৩ মাস পরপর এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে যান পিয়ন ওয়াহেদুল ইসলাম লিটন। তার এই অনৈতিক কাজে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ছয় কর্মদিবস কলেজে গিয়ে না পেয়ে মোবাইলে কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পিয়ন ওয়াহেদুল ইসলাম লিটনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কলেজে আমরা জমি দান করেছি। আমার অনেক বড় বড় নেতার সঙ্গে পরিচয় আছে। আপনার সঙ্গে সামনাসামনি বসে কথা বলব।
কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হারুন-অর-রশিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কলেজে নিয়ম-শৃঙ্খলার কোনো বালাই নেই। পিয়ন কলেজে আসে না সেটা যেমন সত্য, পাশাপাশি এটাও সত্য যে অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন নিজেও ঠিকমতো কলেজ করেন না। কোলা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবু সাঈদ আঙ্গুর বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই লিটন পিয়ন পদের বেতন-ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু ২৫ বছর থেকেই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। কলেজ অধ্যক্ষকে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয় না।
ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক তানসেন হোসেন ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক শিক্ষক জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে সঠিক। এ বিষয়ে কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিহিংসামূলক কেউ এই অভিযোগ করেছে। একটানা ছয় কর্মদিবস কলেজে গিয়ে অফিস খোলা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কোলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহা. আবু তাহির এ বিষয়ে বলেন, পিয়নের কর্মস্থলে না আসার বিষয়টি আমি শুনেছি। খুব শিগগিরই তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।