ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর নামে
‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ পুরস্কার’
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:০২ পিএম  (ভিজিট : ৩৬৪)
 জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানার্থে সৃজনশীল অর্থনীতিতে উদ্যোগের জন্য দুই বছর পরপর তরুণদের উৎসাহিত করতে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফ্লিড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক পুরস্কারটি প্রবর্তন করার উদ্যোগকে বাংলাদেশ স্বাগত জানায়। ইউনেস্কো অর্থাৎ আর্ন্তজাতিক পরিমÐলে জাতিসংঘের কোনো সংস্থা এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর নামে এ পুরস্কার চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শনের আন্তর্জাতিকীকরণ এবং বিশ^ময় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার এ মুহূর্তে সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর আগে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাদেশের একুশে ফেব্রæয়ারি মহান শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ছাড়াও ২০১৭ সালে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ^ ইতিহাসের ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে শুধু ঘোষণা নয়, স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
ইউনেস্কো ২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সভায় প্রথমবারের মতো পুরস্কারটি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ইউনেস্কো আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন খ্যাতিমান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিয়ে থাকে। এই প্রথম বাংলাদেশের জাতির পিতার নামে পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। নিঃসন্দেহে এটা বাংলাদেশের জন্য আনন্দ ও গর্বের সংবাদ। ইউনেস্কোকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইউনেস্কো হচ্ছে জাতিসংঘের ১৪টি অঙ্গ সংস্থার মধ্যে অন্যতম। যা শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকাÐে জড়িত। জাতিসমূহের মধ্যে শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও যোগাযোগের সহযোগিতার মাধ্যমে বিশে^ শিক্ষা বিস্তার, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান চর্চা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা আনায়নই হচ্ছে ইউনেস্কোর প্রাথমিক লক্ষ্য। পৃথিবীর ১৯৮টি দেশ বর্তমানে ইউনেস্কোর সদস্য রাষ্ট্র।
ইউনেস্কোর গঠনতন্ত্রের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, যেহেতু মানুষের মনে গড়ে তুলতে হবে ‘শান্তির সুদূর প্রাচীর’ সেহেতু ইউনেস্কো হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে একটি আদর্শের নাম। আর এ জন্যই ১৯৪৬ সালের ৪ নভেম্বর জন্মের পর থেকেই ইউনেস্কো পৃথিবীময় যা কিছু করেছে এবং করছে সে সবই হচ্ছে মানব জাতির মনে শান্তির আন্দোলনকে জোরদার করার অভীষ্ট প্রয়াস। ইউনেস্কোর স্বীকৃত কর্মক্ষেত্রসমূহের নামেই স্বয়ং পরিস্ফুটিত। কিন্তু তা শুধু শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রেই সীমায়িত নয় গণমাধ্যম ও সমাজবিজ্ঞানের কর্মসূচিতে পরিব্যাপ্ত। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই ১৯৭২ সালে ইউনেস্কোর সদস্যপদ লাভ করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিনের বিরাজমান দ্ব›দ্ব-সংঘাতের অবসান ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সম্পাদনে ও এতদাঞ্চলে শান্তির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ইউনেস্কো কর্তৃক হুকে বোয়ানি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এটাও ছিল বাংলাদেশের একটি অর্জন ও আরেকটি আনন্দের সংবাদ। মর্যাদাবান এই পুরস্কার গোটা জাতির জন্য এক বিরাট সম্মান ও গৌরব বয়ে আনে।
পাবর্ত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বহির্বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল করেছে যা আমাদের জন্য একটি বড় ধরনের খুশির ব্যাপার ছিল। ইউনেস্কোর শান্তি পুরস্কার এমন এক মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক, নোবেল শান্তি পুরস্কারের পরপরই এটার স্থান। ইয়াসির আরাফাত, নেলসন ম্যান্ডেলাসহ বিশে^র শান্তিবাদী এমন কয়েকজন ব্যক্তিত্ব এ পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন। যাদের স্থান শান্তিকর্মী বিশ^বাসীর হৃদয়ে শান্তির অন্বেষায় যারা নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন। হিংসার উন্মত্ততার মধ্যেও যারা বয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন অহিংসার সুবাতাস, এই মহৎ পুরস্কারটি শুধু তাদের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকে। এই বিশাল বিশে^ বাংলাদেশের মতো ছোট্ট একটি দেশ অথচ সাহসী ও শান্তিকামী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জিত ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কারটি ছিল সীমাহীন গৌরবের, দেশবাসীও ছিল এটার অংশীদার। আর এ কথা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ বিশে^ ছোট্ট দেশ হলেও এর ইতিহাস প্রাচীন ও ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। একে পরিপূর্ণভাবে বিশে^র বুকে তুলে ধরার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে হাজারো সমস্যার পরও ইউনেস্কো থেকে শান্তির জন্য পুরস্কারটি অর্জন ছিল হিংসা-বিদ্বেষ ও অশান্তির বিরুদ্ধে ভালোবাসার প্রতীক। যা সহজে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত বঙ্গবন্ধু ইউনেস্কো-বাংলাদেশ পুরস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্মানিত বোধ করছে। এ ছাড়াও মুজিব শতবর্ষেও ইউনেস্কোর উদ্যোগে বিশে^র বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ধরনের অর্জনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জাতির গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাড়াতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন। ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ পুরস্কারটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইউনেস্কোর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম হবে। এ পুরস্কার প্রবর্তনে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ ইউনেস্কোকে সাধুবাদ জানায়।

ষ বাংলাদেশে ইউনেস্কো ক্লাব
    অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close