ভারতের
সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনকে দেশের উন্নয়নে অত্যন্ত সহায়ক বলে মন্তব্য করেছেন
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। রোববার
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিন উপলক্ষে
‘নবজাগরণে নেতাজির আদর্শ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে
নেতাজির জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও দেশপ্রেম দিবস উদযাপন পরিষদ আয়োজিত
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের
চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, বাংলাদেশ
প্রেস ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান আবেদ খান, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি
উত্তম বড়ুয়া ও আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম সেমিনারে বক্তব্য
রাখেন।
নেতাজির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে
কিছু রাজনৈতিক শক্তি আছে যাদের রাজনৈতিক মূল এজেন্ডা হচ্ছে ভারত বিরোধিতা।
প্রতিবেশী তিন দিকের সীমান্তের দেশের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক রেখে এ দেশের
উন্নতি সম্ভব নয়। ভারত বিরোধিতাকেই যারা মূল প্রতিপাদ্য মনে করে রাজনীতিটা
করে তারা আসলে ভুল পথে হাঁটছে। সৌহার্দ্যরে মধ্যেই অগ্রগতি নিহিত। আজ
বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্জিত
উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ভারতের সহযোগিতা অত্যন্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ
করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা উভয় দেশ যে মৈত্রী বন্ধনে এগিয়ে যাচ্ছি এই
মৈত্রীকে আরও সুদৃঢ় করার মধ্য দিয়ে এবং আমাদের আঞ্চলিক ও মানুষে মানুষে
যোগাযোগ আরও বিস্তৃত করার মধ্য দিয়েই আমাদের এ অঞ্চলের উন্নতি সম্ভবপর হবে
এবং আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর স্মৃতির
প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রী ভারতের স্বাধীনতা
সংগ্রামে নেতাজির আহ্বানে আজাদ হিন্দ ফৌজের যে ২৬ হাজার সেনানী জীবন
দিয়েছিলেন, তাদের স্মৃতির প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন,
উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদান ইতিহাসে
সবসময় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। আমাদের জন্য গৌরবের যে নেতাজি বাঙালি
ছিলেন এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু লিখেছেন,
শৈশবেই তিনি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন,
তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা
এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী আজ
নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভারতের ২০ লাখ
ভ্যাকসিন উপহার ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের অনন্য উদাহরণ। ভারতের সব মানুষ
এখনও ভ্যাকসিন পায়নি, তার আগেই আমাদের দেশে এটি এসেছে, এ জন্য ভারত সরকারকে
ধন্যবাদ জানাই। সে সঙ্গে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের কয়েক হাজার সৈন্য
জীবন দিয়েছে, এ দেশের ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে এবং এরও আগে
পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে যেন ফাঁসি দেওয়া না হয়, সে জন্য ইন্দিরা
গান্ধী ৩০টি দেশ সফর করে বিশ^ জনমত গঠন করেছিলেন, সে কথাও গভীর কৃতজ্ঞতা ও
আন্তরিকতায় স্মরণ করি।
ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী তার বক্তৃতায়
বাংলাদেশে নেতাজির জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে অত্যন্ত অন্তর ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনা
বলে অভিহিত করেন এবং দুদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে বলে আশা প্রকাশ
করেন।