ষ মো. ফিরোজ খান ভালুকা (ময়মনসিংহ)
আগামী ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভালুকা পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের লড়াই জমে উঠেছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র ডা. একেএম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে তিনি হবেন বিজয়ে হ্যাটট্রিক। অন্যদিকে বিএনপির গতবারের প্রার্থী হাতেম খান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর হ্যাটট্রিক বিজয় ঠেকাতে শেষ মুহূর্তের প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ছাড়াও মহিলা কাউন্সিলর, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন আরও ৪০ প্রার্থী। পৌরসভার পাড়া-মহল্লা, অলিগলি, চায়ের দোকানসহ সর্বত্রই ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টারে।
১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভালুকা পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর এবার হচ্ছে পঞ্চম নির্বাচন। ২৫ হাজার ৪৪ ভোটের এ পৌরসভায় ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র ডা. একেএম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক হাতেম খান। ছাইফুল ইসলাম সুজন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী হিসেবে তার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে অবৈধ হলে তিনি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল ও পরবর্তী সময়ে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরিয়ে এনে শেষ বেলায় নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা পৌরসভায় ভোটারসহ সর্বস্তরের জনতার মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বিকাল হলে প্রার্থীদের গুণে করা গানে কান জ্বালাপালা হওয়ার উপক্রম। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশাকে অপেক্ষা করে বিশেষ করে মহিলা ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা পায়ে হেঁটে হেঁটে ভোটাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রার্থনা করছেন ভোট। পা ছুঁয়ে কদমমুসি করার পর ভোটারদের হাত প্রার্থীদের মাথায় বুলিয়ে দিলেই তাদের ধারণা এই ভোট মনে হয় তিনিই পাবেন। অপরদিকে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি ও তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই ভোট দেবেন এমনটাই দাবি করেছেন অনেক ভোটার। দল সমর্থিত ভোটার ছাড়াও অনেক ভোটার আছেন যারা প্রার্থীর যোগ্যতা অনুসারে ভোট দেবেন। ২নং ওয়ার্ডের নতুন ভোটার ফারিয়া নুসরাত জানান, পৌরসভা স্থানীয় নির্বাচন তাই, দল নয় প্রার্থীর যোগ্যতা ও গুণাবলি দেখে ভোট দেব।
বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী হাতেম খান বলেন, আমি দীর্ঘদিন পৌরসভার ভোটারদের সুখ-দুঃখের সঙ্গে আছি। হতদরিদ্র, অসুস্থ, দুস্থ, গরিব মেধাবী ছাত্রছাত্রী, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা করে আসছি। করোনা পরিস্থিতি ও বিভিন্ন উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গবিরদের চাল, চিনি, শাড়ি, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে ভোটারদের মন জয় করে আসছি। স্ষ্ঠুু নির্বাচন হলে ইনশাল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হব। বর্তমান মেয়র ডা. একেএম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম বলেন, বিগত ১০ বছর মেয়র থাকাকালীন দলমত নির্বিশেষে জনগণের সেবা ও সহযোগিতা করে আসছি। দলের বাইরেও আমার অনেক ভোটার রয়েছে যারা আমাকে পছন্দ করেন। পৌরসভার ভোটারা এবারও আমাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চায়।
নির্বাচনি রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে ভোটগ্রহণের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে। প্রতি কেন্দ্রে থাকবেন ১ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ২ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের তিনটি টিম।