আগামী ৭ এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত ২৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন। আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত থেকে এসেছে। টিকার প্রাপ্যতার ওপর মানুষের টিকা দেওয়া নির্ভর করবে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে সরকার শিক্ষকদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে টিকা সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, টিকা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নির্ভর করছে টিকা পাওয়ার ওপর। আরও ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত থেকে এসেছে। অর্থাৎ এখানে একটা ঘাটতি রয়ে গেল। এ বিষয়ে সিরামের ওপর আমরা চাপ প্রয়োগ করেছি। এখানে তাদের যে সাপ্লায়ার আছে তাদের ওপরও আমরা চাপ দিয়েছি যে এটা তাড়াতাড়ি মেকআপ করেন। তারা আমাদের বলেছে আগামী মাসে বাড়িয়ে দেবে। কত বাড়িয়ে দেবে সেটা এখনও কনফার্ম করেনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকার বিকল্প উৎস থেকেও টিকা আনার চিন্তা করছে। সরকারের কাছে নতুন কিছু প্রতিষ্ঠান টিকা সরবরাহের জন্য আবেদন করছে।
তিনি বলেন, সে বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে টিকা কতটা পাওয়া যাবে তার ওপর নির্ভর করে।
টিকা নিয়ে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটও চাপের মধ্যে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার এবং বিশ^জুড়েও চাপ আছে। এ ভ্যাকসিন বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে, চাহিদা রয়েছে। আমরা এ বিষয়েও এখন থেকে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। শিক্ষকরা বেশিরভাগই ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে আছে। কাজেই ভ্যাকসিন এমনিতেই পেয়ে যাবে। এ ছাড়া বিমানের পাইলট ও ক্রু ও বন্দরের সব কর্মীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে বলে তিনি জানান।
শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে ১৭ মের মধ্যে টিকা দেওয়া হবে বলে একদিন আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত হবে, আমরা সেভাবেই কাজ করব। ১৮-এর নিচে যারা আছে তাদের তো দিতে পারব না। আমাদের যে হারে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে, যে হারে টিকা নিচ্ছে সেটা বজায় থাকবে যদি সে অনুযায়ী টিকা পাই। যদি টিকা পাওয়ার পরিমাণ কম-বেশি হয়ে যায় তা হলে ভ্যাকসিন দেওয়ার হারও একটু কম-বেশি করতে হবে।
বিদেশগামীরা করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নিলেও কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ লাগবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কারণ যে দেশে যাবে সেটা তারা দেখতে চাইবে। এ কারণে ডাবল ডোজের সার্টিফিকেট এবং কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট দুটোই লাগবে।
সভায় মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।