ষ রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। রাস্তার কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় খানাখন্দে ও ধুলাবালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। কবে নাগাদ শেষ হবে এই রাস্তার কাজÑ এমন ভাবনা যেন সাধারণ মানুষকে ব্যাকুল করে তুলেছে।
এদিকে রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। তিনি বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। জানা যায়, রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকা জুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি রানীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটি প্রশস্ত এবং মজবুত পাকাকরণের জন্য ২০১৮ সালে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ২৬টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত রাস্তার কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে কোনোরকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পড়ে থাকায় রাস্তা জুড়ে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে খানাখন্দে ও ধুলাবালিতে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছে উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় হতাশায় পড়েছে এলাকাবাসী। রাস্তার এমন বেহাল দশার অজুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় বৃদ্ধি করছে ভাড়া। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পথচারীরা, যানবাহনের যাত্রীসহ উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। পথচারী মকলেছুর রহমান, নাহিদ হোসেন, বকুল, হাসান, এমরানসহ কয়েকজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। যানবাহন চালক খালেদ, একরামুল, হাবিব, রুবেল, জাফের আলীসহ আরও অনেকেই বলেন, এই সড়কে আমাদের নিত্য দুর্ভোগ। যাত্রীরা রাস্তার ধুলাবালি ও খানাখন্দের কারণে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে চায় না। রানীনগর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত যেতে আগে সময় লাগত ১০ মিনিট, এখন লাগে ৩০ মিনিট। রানীনগর থেকে কালীগঞ্জ যেতে এক ঘণ্টাও বেশি সময় লাগে। এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। দ্রুত এই সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যদি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু না করে তাহলে চুক্তিনামা বাতিল করাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।