ষ ক্রীড়া ডেস্ক
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জয়রথে চেপে বসেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় টানা ১৯ ম্যাচে অপরাজেয় জার্মান জায়ান্টদের অবশেষে
থামালেন কিলিয়ান এমবাপে। বিশ^কাপজয়ী এই ফরাসি তারকার জোড়া গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজি জিতেছে ৩-২ ব্যবধানে। বায়ার্নের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়নদের জয়ে দারুণ অবদান রেখেছেন নেইমার আর গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও। বুধবার একই রাতে শেষ আটের প্রথম লেগে পোর্তোর বিপক্ষে সহজ পরীক্ষায় ২-০ গোলে উত্তীর্ণ হয়েছে চেলসি।
নিজেদের আঙিনায় দুর্দান্ত ফুটবলই উপহার দিয়েছে বায়ার্ন। বল দখল আর আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য ছিল হ্যান্স ফ্লিকের শিষ্যদের। তবুও লেখা হলো স্বাগতিকদের হারের গল্প এবং পিএসজি নিল প্রতিশোধ। গত মৌসুমে ফরাসিদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শিরোপা উল্লাস করেছিল বায়ার্ন। সেই পরাজয়ের বদলা নেওয়ার রাতে দারুণ সব সেভ করেছেন নাভাস। স্বাগতিকদের ৩১ শটের বিপরীতে ৬ শট নেওয়া পিএসজির গোলমুখে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন কোস্টারিকান গোলরক্ষক।
নাভাসের বীরত্বের পাশাপাশি নেইমারও ছিলেন উজ্জ্বল। স্কোরশিটে নাম নেই তার, তবে ব্রাজিলিয়ান তারকার অ্যাসিস্টেই প্রথম দুই গোল পায় পিএসজি। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে তার পাস ধরে প্রতিপক্ষের জাল কাঁপান এমবাপে এবং ২৮ মিনিটে মার্কুইনহোসকে দিয়ে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বার্সেলোনার সাবেক ফরোয়ার্ড। আক্রমণের পসরা সাজিয়ে প্রথমার্ধেই একটি গোল শোধ দেয় বায়ার্ন। ৩৭ মিনিটে বেঞ্জামিন প্যাভার্ডের অ্যাসিস্টে লক্ষ্যভেদ করেন ইনজুরির কারণে রবার্ট লেভানদস্কির অনুপস্থিতিতে একাদশে সুযোগ পাওয়া এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মটিং।
ম্যাচের এক ঘণ্টার মাথায় স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি ফেরান টমাস মুলার। জশুয়া কিমিচের পাস ধরে বায়ার্নকে সমতাসূচক গোল উপহার দেন জার্মান ফরোয়ার্ড। আট মিনিট বাদেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সেই স্বস্তি কেড়ে নেন এমবাপে। এ যাত্রায় অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বাড়ানো বলে স্কোরলাইন ৩-২ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড এবং ২০১৯ সালের মার্চের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হারের স্বাদ পায় বায়ার্ন। আগামী মঙ্গলবার রাতে প্যারিসে ফিরতি লেগ খেলবে ফ্লিকের শিষ্যরা। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে তাদের।
পার্ক দেস প্রিন্সেসে বায়ার্নের জন্য কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করলেও সতর্ক পিএসজি তারকা এমবাপে, ‘আরও আত্মবিশ^াস নিয়ে আমাদের আক্রমণ করতে হবে, যেহেতু আমরা বড় একটি দলের মুখোমুখি হব এবং এটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।’ আর প্রথম লেগ জয়ের শ্রেয়টা গোটা দলকেই দিলেন এই ফরোয়ার্ড, ‘সর্বোপরি এটা দুর্দান্ত টিম পারফরম্যান্স। আমরা নিঁখুত ছিলাম এবং নিজেদের শক্ত মুহূর্তগুলোতে কীভাবে ক্ষতি করতে হয় তা জানতাম। দ্বিতীয়ার্ধে একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি আমরা।’
একই রাতে অগ্নিপরীক্ষা পোর্তোরও। স্পেনের সেভিয়ায় হোম ম্যাচে পর্তুগিজ ক্লাবটি আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও দেখেনি গোলের মুখ। উল্টো চেলসির কাছে প্রথম লেগে হেরেছে ২-০ ব্যবধানে। করোনা আতঙ্কে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে নেমে দুই অর্ধে দুই গোল হজম করে পোর্তো। ৩২ মিনিটে ম্যাসন মাউন্টের স্ট্রাইকের পর ৮৫ মিনিটে ব্লুজদের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেন চিলওয়েল। একই ভেন্যুতে শেষ আটের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল।
প্রথম লেগে শিষ্যদের ভুগতে দেখলেও শেষতক জয় আসায় তুষ্ট চেলসি কোচ টমাস টুখেল, ‘পোর্তো খুব শক্ত ছিল এবং আমরা কিছুটা ভুগেছি। প্রথমার্ধে যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিলাম না। জীবনটা কঠিন ছিল কারণ পোর্তো তাদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দেখিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত বল বেশিরভাগ সময় আমাদের দখলে ছিল এবং চাপটা সামলে নিতে পারি। বদলি নামা খেলোয়াড়রা যথেষ্ট সাহায্য করেছে। সুতরাং সব মিলে এই ফলাফলে খুব আনন্দিত আমি।’