ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইসলাম যে কারণে ‘শিশুশ্রম’ না বলে
প্রকাশ: শনিবার, ১২ জুন, ২০২১, ১১:২২ পিএম  (ভিজিট : ১২১)
ডা. মাহতাব হোসাইন মাজেদ
বেঁচে থাকার তাগিদে কিংবা পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে কোমলমতি শিশুদেরও প্রচুর ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। ফলে তারা নানা রকম শারীরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, এমনকি মৃত্যুবরণও করছে। শিশুশ্রম হলো সামাজিক শোষণের দীর্ঘস্থায়ী এক হাতিয়ার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০০২ সাল থেকে জুন মাসের ১২ তারিখে শুরু হয় বিশ^ শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। বিশে^র অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে আজ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে শিশুশ্রম বেড়েছে এবং বাড়বে। এটি একটি বৈশি^ক সমস্যা। আমাদের দেশেও প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন শিশু বিভিন্ন শ্রমে জড়িত।
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ইসলামে শিশুশ্রম পরিত্যাজ্য। শিশুশ্রমের ফলে তাদের মননশীলতা ও দৈহিক ক্ষতি হয়। আজ যারা শিশু, ভবিষ্যতে তারাই যুবক। তারাই সুশোভিত ও গৌরবময় ভবিষ্যতের পথনির্দেশক। আজকের শিশুর মাঝেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের সুন্দর পৃথিবী। নবীজি (সা.) অবহেলিত শিশুদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ও বিনোদনের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ধর্মে-কর্মে যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি শিশুদের প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। শিশুদের প্রতি কোমল ব্যবহার নিজে করেছেন এবং অন্যদের সে ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিশুদের স্নেহ করে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আবু দাউদ : ৪৯৪৩)
সমাজ-জীবনে বাস্তবতার নিরিখে শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও সাময়িক সময়ের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় তাদের নিয়োগ করা যেতে পারে। পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগও রাখতে হবে। দারিদ্র্যের কারণে শ্রম বিক্রি করতে যাওয়া শিশুদের জানাতে ও বোঝাতে হবে যে তাদের দারিদ্র্য দূর করার মোক্ষম হাতিয়ার হলো শিক্ষা। ইসলামের বিধান হলো, পিতা অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের উপার্জনের জন্য বাধ্য করতে পারবেন না। তিনি উপার্জন করতে পারলে করবেন, নতুবা ঋণ করে তাদের খরচের ব্যবস্থা করবেন, যেন তারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক হলেও শিক্ষা চলাকালে পিতা তাদের খরচ চালিয়ে যাবেন। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/৫৬১, রদ্দুল মুহতার : ৫/৩৪১)
ইসলামে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও সমাজে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে শিশুদের কাজ করতে দেখা যায় না। চরম দারিদ্র্য ও দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এর মুখ্য কারণ। হতদরিদ্র পরিবার সংসারের ব্যয় নির্বাহে অসমর্থ হয়ে বা অভিভাবকদের কর্মহীনতার কারণে মা-বাবার স্থলে শিশুরা অর্থ উপার্জনে অগ্রসর হয়। তাই শিশুশ্রম বন্ধ করতে না পারলে যতটা সম্ভব শিশুর কর্মস্থল ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ করা প্রয়োজন। উন্নত ও ধনী দেশে শিশুরা সব ধরনের অধিকার পেলেও দরিদ্র দেশে তারা মানবাধিকারবঞ্চিত থেকে যায়। একদিকে যেমন তারা সুন্দর ও নিরাপদ শৈশব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। শিশুরা যখন তাদের সোনালি জগতের বাইরে অন্য জগতে প্রবেশ করে, বেঁচে থাকার রসদ জোগান দেয়, তখন তাদের শারীরিক, মানসিক, আবেগিক, সামাজিক ও নৈতিকতার অবনতি ঘটতে থাকে।









সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close