প্রকাশ: শনিবার, ১২ জুন, ২০২১, ১১:২২ পিএম (ভিজিট : ১৬৩)
রাশেদ নাইব
দুনিয়া যখন গভীর ঘুমে নিমগ্ন, আল্লাহর কিছু প্রিয় বান্দা তখন তাঁর ডাকে সাড়া দেয় এবং তাঁর আরও নিকটবর্তী হওয়ার লক্ষ্যে, গুনাহ মাফের প্রত্যাশায় তাহাজ্জুদ আদায় করে থাকে। কারণ এ সময়ের ইবাদত মহান আল্লাহর কাছে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অধিক প্রিয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশঙ্কায়। আর আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদা : ১৬)। শুধু নামাজ আদায় নয়, রাতের শেষ ভাগে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা খাঁটি ঈমানদারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত ব্যয়কারী ও রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থী।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৭)
তাহাজ্জুদ নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর শ্রেষ্ঠ নামাজ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদের নামাজ।’ (মুসলিম : ১১৬৩)। তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নিচের আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব! কে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে দান করব! আর কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি ও মুসলিম)
ইসলামের প্রাথমিক যুগে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের নির্দেশ ছিল। আল্লাহর রাসুল (সা.) রাতের দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে উঠে পড়তেন এবং গভীর অন্ধকারে মহান প্রভুর দরবারে দাঁড়িয়ে আল্লাহর বাণী পাঠ করতেন এবং সেজদায় লুটিয়ে ক্রন্দন করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তবে উম্মতের জন্য ৮ রাকাতই পড়া আবশ্যক নয়। সম্ভব হলে ৪ রাকাতও পড়া যায়, ১২ রাকাতও আদায় করা যায়। দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া নবীজির নিকট বেশি প্রিয় ছিল। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে রাতের শেষ
প্রহরে তাহাজ্জুদের মাধ্যমে তাঁর সান্নিধ্য অর্জন এবং বেশি বেশি রহমত ও বরকত অর্জনের তওফিক দান করুন। আমিন।