ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

অক্সিজেনের জন্য হাহাকার
সঙ্কট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিন
প্রকাশ: সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১, ৯:০৪ এএম আপডেট: ১৪.০৬.২০২১ ৯:৩২ এএম  (ভিজিট : ১৯৬)
দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় করোনা সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে শনাক্তের হার প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, শনিবার ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনায় আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। খবরে প্রকাশ, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে শয্যা ও আইসিইউ নিয়ে হাহাকার দেখা দিয়েছে। রাজশাহীতে হাসপাতালে শয্যা নেই। সাতক্ষীরাতেও একই অবস্থা। রাজশাহী, সাতক্ষীরায় আইসিইউর ব্যবস্থা থাকলেও অন্য জেলাগুলোতে তা নেই। সীমান্তবর্তী জেলায় অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। অনেকেই অক্সিজেনের সিলিন্ডার পাচ্ছেন না। ফলে তাদের নিদারুণ কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সীমান্ত অঞ্চলে এমন পরিস্থিতির যে সৃষ্টি হতে পারে সেই আশঙ্কা আমরা আগেই করেছিলাম। সেই সঙ্গে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছি। কেননা এই ভ্যারিয়েন্টের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই যে, এতে আক্রান্ত প্রায় সবারই তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। ফলে আক্রান্তদের প্রাণরক্ষার জন্য দিতে হয় অক্সিজেন। সম্প্রতি ভারতে এই ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে অক্সিজেন দিতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। একপর্যায়ে তীব্র অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দেয়। শুধু অক্সিজেনের অভাবে দেশটিতে বহু মানুষ মারা যায়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের মাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন হলে বড় রকম সমস্যা হতে পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারকে অক্সিজেন মজুদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। এতে প্রাণহানি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এ প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, দেশে এই মুহূর্তে অক্সিজেনের সঙ্কট নেই। আর গত ৭ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেছেন, দেশে এখন ১৫০০ টন লিকুইড (তরল) অক্সিজেন মজুদ আছে। যদি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট করোনার তৃতীয় ঢেউ সৃষ্টি করে তাহলে পুরোপুরি না হলে কিছুটা হলেও এই অক্সিজেন দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবার করোনার সময় প্রতিদিন ১৮০ টন লিকুইড অক্সিজেন চাহিদা ছিল। এই চাহিদার বিপরীতে আমাদের ঘাটতি ছিল ২০ টন। এই ঘাটতি ভারত থেকে আমদানি করে পূরণ করা হতো। এরপর ভারত লিকুইড অক্সিজেনের রফতানি বন্ধ করায় যে সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছিল তা দেশীয় কোম্পানিগুলোর উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে। দেশের ভেতরে যেসব কোম্পানিতে অক্সিজেন উৎপাদন হতো সেগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে এবং বর্তমানে মজুদ আছে। আমাদের দেশে যতগুলো প্লান্ট আছে সবগুলো ভরে রাখা প্রয়োজন ব্যবহারের জন্য। আমাদের দেশে এখন যেহেতু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলসমূহে অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেহেতু অক্সিজেনের মজুদ ও সুষম বণ্টন ব্যবস্থার বিষয়টি এখনই বিশেষভাবে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।

সীমান্ত অঞ্চলে কেন অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে এ বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখা জরুরি। কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের হীন স্বার্থে ওইসব অঞ্চলে অক্সিজেনের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে থাকলে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বৈশ্বিক মহামারির এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষের জীবন রক্ষার অবলম্বন অক্সিজেন নিয়ে বাণিজ্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close