ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

১৭ মাস পর ‘উপস্থিত স্যার’
প্রকাশ: রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:৫১ এএম আপডেট: ১২.০৯.২০২১ ১২:২০ পিএম  (ভিজিট : ৩৭০৩)
বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর খুললো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। ইউনিফর্ম পড়ে, কাঁধে বই-খাতার ব্যাগ ঝুলিয়ে দলবেধে শিক্ষার্থীরা আবারও ফিরেছে তাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রিয় শিক্ষাঙ্গন। 

রোববার ক্লাসে রোল কল করার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ বলছে ‘উপস্থিত স্যার’, কেউ বলছে ‘জ্বি স্যার’। রোল কলে অনেকটাই মুখরিত শ্রেণিকক্ষ। এতে শিক্ষকদের মনে পুরনো আমেজ ফিরে এসেছে। শিক্ষার্থীরাও আপ্লুত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে এই উচ্ছ্বাস। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে।

এদিকে এই উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, লেখাপড়ার দীর্ঘ বিরতি, পুনরায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনযোগী করে তোলাসহ নানা শঙ্কা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লেখেন, ‘দেড় বছর পর রাস্তায় স্কুল ড্রেস ও স্কুল ব্যাগ হাতে ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণা দেখতে খুব ভালো লাগছে। ভার্চুয়াল স্কুল থেকে একচুয়ালি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণা এই মুহূর্তে কতটা সফল হবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। বিশেষ করে কোরোনার অর্থনৈতিক আঘাতের ফলে ঝরে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরিয়ে আনা কঠিন চ্যালেঞ্জের হবে। কোরোনার কারণে অভিভাবকদের স্থানান্তর, পেশা পরিবর্তন বা চাকুরিচ্যুতির কারণে এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণের শিকার হয়েছে অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী। তাদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা পূর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত কঠিন হবে। বিশেষ করে ছাত্রীদের। করোনার কারণে অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে ইতোবৎসরে। তাদের বেশির ভাগকেই আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনা যাবে না হয়তো। সংসারের আয় হ্রাস পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীকে ইতোমধ্যেই কোনো না কোনোভাবে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। তাদের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করা চ্যালেঞ্জের হবে। নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি কমে যাওয়ায় অনেক পরিবারের পক্ষে শিক্ষার্থীকে স্কুলে পাঠানো কঠিন হয়ে পড়বে।এই অবস্থায় শিক্ষা ক্ষেত্রে করোনার আঘাত এবং শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব নিয়ে একটি সর্বাত্ত্বক জরিপ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। এবং নানাভাবে ঝরে পড়া স্কুলশিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ ও প্রণোদনা দাবি জানাচ্ছি।’

সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার ছবি শেয়ার করে সাংবাদিক ও গীতিকার তারেক আনন্দ লেখেন, ‘ঘুমের দিন শেষ। আবার শুরু হলো ডিউটি।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে নিজের সন্তানের তোলা ছবি শেয়ার করে তার জন্য দোয়া চেয়ে তুলে শিমু দে লেখেন, ‘স্কুলে ভর্তি হবার পর থেকে ঘরেই কেটে গেছে ৮ মাস, আজ প্রথম তার স্কুলে যাওয়া। সবাই আমার বাবার জন্যে আশীর্বাদ করবেন।’

আপন চৌধুরী লেখেন, ‘দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে আজ। ছাত্রছাত্রীদের মাঝে উৎসবের আমেজ। সবাইকে জানাই একটি আলোকিত সুন্দর দিনের শুভেচ্ছা।’

পুরোদমে পাঠদান শুরু করার আহ্বান জানিয়ে মাজহার মাহবুব লেখেন, ‘খুলে দেওয়া হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার বিকল্প যেহেতু নাই, প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিকল্পও নাই। পড়াশোনা থেকে এক দিন পিছিয়ে থাকা মানে জাতির উন্নয়ন অগ্রগতিতে ১০০ দিন পিছিয়ে থাকা। পুরোদমে শুরু হোক পাঠদান।’

সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিক মাসুদ রানা লেখেন, ‘প্রায় ১৮ মাস পর স্কুল-কলেজ খুলছে। খুবই ভাল সংবাদ। এদিকে ক্লাস চলার সময় বিভিন্ন টেলিভিশনের আমার সহকর্মীরা ক্লাস রুমে ঢুকে টিচারদের ইন্টারভিউ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দেখলাম কেউ কেউ মাস্ক খুলে ক্যামেরায় হাই, হ্যালো করছে। ব্যাপারটা একদমই ভাল লাগেনি। ক্লাস রুমে ঢুকার জন্যও কেউ অনুমতি নেবার প্রয়োজন মনে করছে না।’

শুভ কামনা জানিয়ে বেলি রহমান লেখেন, ‘শিক্ষক/শিক্ষার্থী সকলের জীবন নিরাপদ হোক এই কামনা রইলো। শুভ হোক নতুন করে শিক্ষা জীবনের সূত্রপাত। সকলের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা।’

শঙ্কা প্রকাশ করে নীরা হক লিখেন, ‘যেহেতু করোনার প্রকোপ পুরোপুরি কমে নাই। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। না হলে আবার বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই!’




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close