ই-পেপার শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

আরও বন্দর ও রুট ব্যবহার করতে চায় ভারত
প্রকাশ: বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৩ এএম  (ভিজিট : ২৮৩)
বুধবার (২০ অক্টোবর) ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের নৌ সচিব পর্যায়ের বৈঠক। নৌপথের যাত্রী, পর্যটক ও নাবিকদের ভারতে প্রবেশে অনঅ্যারাইভাল ভিসা; দুদেশের নাবিকদের পারস্পরিক প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশি জাহাজের ভারতের অভ্যন্তরে চলাচল প্রক্রিয়া সহজ করাসহ ১১টি বিষয়ে আলোচনা হবে বৈঠকে। বৈঠকে আলোচনা হবে, পণ্য ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় আরও নতুন বন্দর ও রুট যুক্ত করার বিষয়েও।

বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার মোট তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেগুলো হচ্ছে- দুদেশের নৌ সচিব পর্যায়ের বৈঠক, ২১তম স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক এবং দ্বিতীয় আন্তঃসরকার বৈঠক (আইজিসি)। দুটি বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের নৌ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্উদ্দিন চৌধুরী। স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন নৌ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা-১) একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী। এর আগে ২০১৯ সালের ৪ ও ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নিতে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল গতকাল নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে। নৌ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সূত্র জানায়, পণ্য ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় আরও নতুন বন্দর ও রুট যুক্ত করতে ঢাকাকে অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। উপকূলীয় জাহাজ চলাচল চুক্তির (সিএসএ) আওতায় কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জের বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনাল সামিট অ্যালায়েন্স বন্দরকে (এসআইপিএল) ‘পোর্ট অব কল’ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে দেশটি। এ চুক্তির আওতায় ৬ হাজার গ্রস টনের চেয়ে বড় জাহাজ যাতে চলাচল করতে পারে, সে পদক্ষেপ নেওয়ারও অনুরোধ করেছে। এ ছাড়া তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির সুযোগ তৈরি করতে দুটি চুক্তি সংশোধনে আবারও প্রস্তাব দিয়েছে দিল্লি। ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের ওপর আরোপিত ফি ও চার্জ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে এসব বিষয় এজেন্ডা হিসেবে রেখেছে দেশটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।

কক্সবাজারকে পোর্ট অব কলভুক্ত করার প্রস্তাবের বিষয়ে নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুদেশের এজেন্ডায় এ বিষয় রয়েছে। ওই বৈঠকে আমরা কক্সবাজারের অবকাঠামোগত বিষয় তুলে ধরব। এটি কতটুকু কাজে লাগবে, কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে সেটা বিবেচনায় রেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির সুযোগ তৈরিতে চুক্তি সংশোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভারতের প্রস্তাব। বৈঠকে কীভাবে উপস্থাপন করে এবং কী সুবিধা পাওয়া যাবে তা বিবেচনায় রেখে আলোচনা করা হবে।

২১তম স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক : প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) আওতাধীন ২১তম স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের ১০টি ও ভারতের ১২টি এজেন্ডা রয়েছে। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী। এ বৈঠকে পিআইডব্লিউটিটি চুক্তির আওতায় পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জ বন্দরকে ট্রান্সশিপমেন্ট পয়েন্ট হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব করেছে ভারত। এজন্য চুক্তির ২৩.১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজন হবে। এটি হলে ভারতের বিভিন্ন বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য এসে এসব বন্দর থেকে সড়কপথে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে যেতে পারবে। এ ছাড়া চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত এবং ফেনী নদীতে দেশটির পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের সুযোগ চায় দেশটি। অন্যদিকে বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের ভারতের নৌপথে যেসব সমস্যায় পড়তে হয়, সেগুলোর সমাধান এবং ঝড়ের সময়ে বাংলাদেশি জাহাজ নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা তুলবে ঢাকার প্রতিনিধিদল।

আন্তঃসরকার বৈঠক : দ্বিতীয় আন্তঃসরকার বৈঠকে বাংলাদেশ দুটি এবং ভারত চারটি এজেন্ডা রেখেছে। এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন চৌধুরী। এ বৈঠকে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট ফি, বন্দর চার্জ ও রোড চার্জ পুনর্বিবেচনার জন্য এজেন্ডায় রেখেছে ভারত। এ সংক্রান্ত একটি স্থায়ী রেট কার্যকর করতে অনুরোধ জানাবে দেশটি। অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ে বড় আকারের জাহাজে পণ্য পরিবহন করতে ভারতকে অনুরোধ জানানো হবে।

দুদেশের মধ্যে ১১টি করে মোট ২২টি ‘পোর্ট অব কল’ রয়েছে। সেগুলো হলো- বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মোংলা, সিরাজগঞ্জ, আশুগঞ্জ, পানগাঁও, রাজশাহী, সুলতানগঞ্জ, চিলমারী, দাউদকান্দি ও বাহাদুরাবাদ এবং ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ, পান্ডু, শিলঘাট, ধুবরি, ধূলিয়ান, মায়া, কোলাঘাট, সোনামুড়া ও যোগীগোপা। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তির অনুসরণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) ১৯৭২ সালের ১ নভেম্বর স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান পিআইডব্লিউটিটি ১৯৭২ সালে স্বাক্ষরের পর থেকে নবায়নের ভিত্তিতে অব্যাহত আছে।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close