ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

অসাম্প্রদায়িক ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ
প্রকাশ: রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ১০:১৮ এএম  (ভিজিট : ৬৪৩)
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে সারা বিশে^ পরিচিত। এই দেশের সম্প্রীতি বিনষ্টে এক শ্রেণির মানুষ মাঝেমধ্যে তৎপর হয়। মাথা চাড়া দেয়। বিশেষ করে কোনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আসলে। তাদের এই অপকর্ম সরকারকে বিব্রত করে। দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। মানুষের এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে।
 
অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার নজির বাংলার পরতে পরতে লুক্কায়িত। কোনো সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদ সব সময় করেছে, এখনও করছে বাংলার মানুষ। ইতিহাস এর জ্বলন্ত সাক্ষী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যখনই হামলা হয়েছে তখনই এর প্রতিবাদ ওঠে এসেছে এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। কারণ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করার দেশ বাংলাদেশ। সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বিনোদনে সবাই একসঙ্গেÑ এই হলো বাংলাদেশের রীতি। তাই বাংলাদেশকে বলা হয় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।
 
মানুষ জন্মগতভাবেই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব। পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করছে। লাখকোটি বছরের পৃথিবী আর হাজার বছরের মানবসভ্যতা তারই প্রমাণ বহন করে।

আদিকাল থেকেই মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। কে হিন্দু? কে খিস্টান? কে বৌদ্ধ? কে মুসলমান? এই ভেদাভেদ ছিল না। সবার একটাই পরিচয় ছিল- ‘মানুষ’।

‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’। এই ছিল মানবিক মানবসমাজের রীতি। ধর্মীয় আচার-আচরণ, রীতিনীতি সবাই পালন করত। ধর্ম ছিল যার যার কিন্তু উৎসব সবার।

পৃথিবীর জন্মের পর এই যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল তার রেশ এখনও আছে। মানবসমাজের অনেকটা জুড়েই আছে এই সম্প্রীতি। পূজা-পার্বণ, ঈদ-আনন্দের দিনে পাওয়া যায় এর প্রমাণ। বহিঃপ্রকাশ ঘটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। মানবসমাজের মানবিক বন্ধনের চিরায়ত রূপটির দেখা মেলে এই উৎসব আয়োজনে। মানুষে মানুষে বিভেদ, রেষারেষি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা আদিকাল থেকেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও ঠিক তখন থেকেই। সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে, গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে মিল-মহব্বতও তখন থেকেই। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব সম্প্রদায়ের লোকজনের একসঙ্গে চলাফেরা-ওঠাবসা তখন থেকেই।

সমাজে সমাজে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, দেশে দেশে মিল-মহব্বত ঠিক তখন থেকেই। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনেক পুরনো। জনম জনম আগের।
যুগে যুগে, কালে কালে অনেক কিছুই পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অম্লান। অক্ষয়। এই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ বলেই মানবসমাজে ‘শান্তি’ নামক শব্দটা এখনও বিরাজমান। যেদিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে না সেদিন শান্তিও বিদায় বলে চলে যাবে। 

মুসলমানদের আদিপিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদিমাতা বিবি হাওয়া থেকে পৃথিবীর সব মানুষ বা আদম সন্তান এসেছে। মুসলমান সম্প্রদায় এই কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। 

আদম (আ.) ও হাওয়ার দুই সন্তান হাবিল ও কাবিল। মূলত এভাবেই পৃথিবীতে মানুষের বংশবৃদ্ধি ও বিস্তার শুরু হয়। মানুষ আস্তে আস্তে পৃথিবীতে তাদের অস্তিত্বের জানান দিতে থাকে। 

পৃথিবীতে মানুষ আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। পশুপাখি-জীবজন্তুর সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার জন্য মানুষ দলবদ্ধভাবে বসবাস শুরু করে। এই দলবদ্ধ জীবন থেকেই আসে সাম্প্রদায়িক জীবন। আসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। যে সম্প্রীতি আজও বিরাজমান। আজকের সমাজ ও সমাজের মানুষ আদিকালের সমাজ ও সমাজের মানুষের ধারাবাহিকতা। মানুষ যেখানে, সমাজ সেখানে। সম্প্রদায় সেখানে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সেখানে।

এক সম্প্রদায় আরেক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করা, ভাগাভাগী করে খাওয়া সেই আদি সমাজেরই ধারাবাহিকতা। মানবসমাজ যেমন মুছে ফেলা যাবে না, মানবসভ্যতাও না। তেমনি সম্প্রদায় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও না। 

পাঁচ লাখ বছর আগে মানুষ বনেজঙ্গলে বসবাস করত। তখন মানুষের ঘরবাড়ি ছিল না। তারা গাছের ফলমূল জোগাড় করে খেত। এসময় মানুষ ছোট ছোট দলে বাস করত। এযুগের মানুষ আগুন আবিষ্কার করেছিল। এরা ছিল আদিম মানুষ। আদিম মানুষরাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করত। তাদের মধ্যে পারস্পরিক মেলবন্ধন ছিল। নিজেরা মিলেমিশে থাকত। একসঙ্গে বসবাস করত। সে সময় একটা সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থেকে মিলেমিশে চলত সবাই।

পঞ্চাশ হাজার বছর আগে মানুষ পশু শিকার করত। গোষ্ঠী সমাজে বসবাস করত। এই সমাজের মানুষ বড় বড় প্রাণী শিকার করতে শিখেছিল। এ যুগের মানুষ কথা বলতে পারত। এরা ছিল বুদ্ধিমান মানুষ ও আধুনিক ধরনের মানুষ। আমরা আসলে তাদেরই বংশধর।

এ যুগের মানুষ বড় বড় দলে বাস করত। এ দলকে বলা হতো ক্ল্যান। এক একটা ক্ল্যানে ২০০ লোক থাকত। ক্ল্যানের মানুষরা পরস্পরের আত্মীয় ছিল। কাছাকাছি স্থানের ক্ল্যানগুলো নিয়ে গোষ্ঠী বা ট্রাইব গঠিত হতো। এসময় মানুষ দল বেঁধে বড় বড় হাতি, গন্ডার, মহিষ, হরিণ প্রভৃতি পালকে আক্রমণ করে শিকার করত। তখন মানুষ পাথরের অস্ত্র, বল্লম, তীর, ধনুক প্রভৃতি হাতিয়ার তৈরি করতে শিখেছিল। এ যুগের শিকারি মানুষেরা অমসৃণ পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত। শিকারি যুগের মানুষদের বলা হতো বন্য মানুষ।

আদিম মানুষের সংস্কৃতির উপাদান ও তাদের অনেক সদগুণ এখনও আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে আছে। যেমন- মানুষে মানুষে স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার সম্পর্ক থাকা যে ভালো একথা আমরা আদিম সমাজের মানুষের কাছ থেকেই শিখেছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও তাদেরই শেখানো। 
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় ছিল। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান সবাই ছিল বাঙালি। একসঙ্গে লড়েছে, একসঙ্গে মরেছে, একসঙ্গে দেশ স্বাধীন করেছে।

১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ ছিল এক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ রোপিত হতে থাকে।

সে সময় হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালানো হয়েছিল। তাদেরকে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। নানা রকম অত্যাচার, অবিচার, নিপীড়ন, নির্যাতন করে তাদেরকে ভারতসহ অন্যান দেশে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। হিন্দুর বাড়ি লুট, ঘরে আগুন এমন খবর প্রায়ই নজর কাড়ত। পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের খবরও আসত।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামার খবর খুব একটা নজরে আসেনি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ও ২০১৪ সালে তৃতীয়বার শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তেমন কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার খবর পাওয়া যায়নি। 

বলা যায়, ২০০৯ থেকে ২০২১ টানা ১৩ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, ঘরবাড়ি ও পূজামণ্ডপে ধারাবাহিক হামলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার। এ নিয়ে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ জানিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। 
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। ধর্ম নিয়ে কেউ যাতে কোনো বাড়াবাড়ি না করে তা নিশ্চিত করা তার সরকারের লক্ষ্য। 

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বর্ণধর্ম-দলমত নির্বিশেষে সবাই সমানাধিকার নিয়ে বসবাস করবে। থাকবে না কোনো সাম্প্রদায়িকতা। যারপরনাই সাম্প্রদায়িক হানাহানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। 

রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ চার ঘণ্টা ধরে প্রতিবাদ করেছে। সাম্প্রদায়িক হামলা ও হানাহানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছে। 

ইতোমধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। অভিযোগ আছে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল তৎপরতা চালাচ্ছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সদাসতর্ক। 

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে যে মহল বা মহলবিশেষ কালো থাবা মেলেছে তাদেরকে শিগগির আটক করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিবাদ সমাবেশে। ১৮ অক্টোবর প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ সারা দেশের সব মানুষের প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ।
বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে যে দেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থেকে চলছে সে দেশের একটা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর কলঙ্কের। এই কলঙ্কজনক কাজের জন্য যারা দায়ী তারা অবশ্যই বিচারের আওতায় আসবে। যথাযথ শাস্তি পাবে। 

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে কত অনুষ্ঠান হয়, উৎসব-পার্বণ হয়। সারা পৃথিবী দেখে কী সুন্দর অসাম্প্রদায়িক দেশ বাংলাদেশ! বাংলা নববর্ষ, খ্রিস্টীয় নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইন ডে, পহেলা ফাল্গুন, বৈশাবী উৎসব, রথযাত্রা, দুর্গাপূজা সবই পালন করা হয় এক অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে। সারা পৃথিবী বাহবা দেয়।

গুটিকয়েক মানুষের কারণে বাংলাদেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে পারে না। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বদনাম হতে পারে না। তাই হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের যত দ্রুত পারা যায় খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

সুজলা-সুফলা, শস্যশ্যামলা সোনার বাংলা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে জানাবে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক। এ দেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান। সবার অধিকার সমান। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের অধিকার সমান। যার যার ধর্ম সে সে নির্বিঘ্নে পালন করছে। করবে।

অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান সবাই হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে। আনন্দ করছে। উল্লাস করছে। অনুষ্ঠান-পার্বণে সবাই যার যার ধর্ম পালন করছে। 

একটা স্লোগান প্রায়ই শোনা যায়- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ সত্যিই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। সম্প্রীতির বাংলাদেশ।

লেখক: সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close