ভারতে পাস হলো কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল
মুকুল বসু, কলকাতা
|
![]() তারপর সংসদের দুই কক্ষেই অধিবেশন বেলা ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করে দেন স্পিকার। এদিন বেলা ১২টায় অধিবেশন ফের শুরু হতেই কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল, ২০২১ পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। ধ্বনিভোটে তা সঙ্গে সঙ্গেই পাস হয়ে যায়। বিরোধীরা কৃষি আইনের ওপর আলোচনার যে দাবি করেছিলেন, তা খারিজ করে দেয় সরকার পক্ষ। এদিকে এখনো বিক্ষোভরত কৃষকরা রাজধানী দিল্লির সীমানায় বসে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুরুপরবের দিন মৌখিকভাবে তিনি কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনরত কৃষকদের দাবি ছিল, সংসদে আনুষ্ঠানিক প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চলবে। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই এই নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন বিরোধীরা। সরকার পক্ষ সেই দাবি না মানায় শুরু হয় তুমুল শোরগোল। এদিকে বিরোধীরা চেয়েছিলেন কৃষি বিল প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হোক। আলোচনায় উঠে আসুক লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যার মতো ঘটনা। কিন্তু সেই সুযোগই দিল না মোদি সরকার। কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাস করাল বটে। তবে কোনো আলোচনা ছাড়াই। মাত্র চার মিনিটে। তাতেই বেজায় চটলেন বিরোধীরা। তাদের কণ্ঠরুদ্ধ করার অভিযোগ তুললেন। এদিন কংগ্রেস হুইপ নির্দেশ জারি করেছিলো, সব সাংসদকে অধিবেশনে থাকতে হবে। চেয়েছিল মোদি সরকারের টুঁটি চেপে ধরতে। কিন্তু হলো না কিছুই। ক্ষোভ প্রকাশ করল তৃণমূলও। টুইটারে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখলেন, ‘শূন্য প্রতিশ্রুতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনি পেগাসাস নিয়ে আলোচনা থেকে সরে গিয়েছিলেন। তাই বাদল অধিবেশন ভেস্তে গেছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আপনি সব নীতি ভেঙে রীতিমতো বুলডোজার চালিয়ে কৃষি আইন এনেছিলেন। সমস্যা হলো, আপনার মন্ত্রিসভার একজনও আপনাকে বলে না যে, সংসদটা আপনার মন কি বাত নয়। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরি বললেন, আমরা বিল পেশের সময় লখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলাম। কোনো আলোচনা ছাড়াই বিল পাস হয়ে গেল। এর আগেই আইন প্রত্যাহারের ছটি বিল পাস হয়েছে সংসদে। প্রতি ক্ষেত্রেই আলোচনা হয়েছিল।’ একই সুর শোনা গেল এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের গলায়। তিনি বললেন, ‘এই সরকার আলোচনা চায় না। ওদের বিতর্ক নিয়ে সমস্যা রয়েছে।’ কংগ্রেসের আর এক সাংসদ শশী থারুর বললেন, ‘ওরা যা করল, তা ভুল। আমরা কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, আন্দোলনে মৃতদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। সরকার সেই সুযোগই দিল না।’ এসব অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। তিনি বললেন, ‘বিরোধীদের উদ্দেশ্য আসলে কী, বুঝতেই পারছি না। দাবি ছিল, কৃষি আইন প্রত্যাহার। এমনকী বিরোধী দলগুলোও তাই চেয়েছিল। আমরা যখন বিল আনলাম, তখন ওরা ভেস্তে দিতে শুরু করল। এখন বিল প্রত্যহার করে নিলেও বিরোধীদের সমস্যা। আসলে বিরোধীরা কী চান সেটাই স্পষ্ট নয়। /জেডও/
|