ই-পেপার শুক্রবার ৪ অক্টোবর ২০২৪
শুক্রবার ৪ অক্টোবর ২০২৪

বিদায়ি বছরের আলোচিত ১০
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:০২ এএম  (ভিজিট : ৭৬৬)
বিদায়ের সুর বড় করুণ। তবু এই সুরের মধ্য দিয়ে জানাতে হয় বিদায়। স্বাগত জানাতে হয় নতুনকে। এরপরও পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গানের সুরে বলতে হয়- ‘কূল ছেড়ে মাঝ দরিয়ায়, পেছনের পানে চাই’। একইভাবে বছরের একেবারে শেষ দিনটিতে এসে পেছনের বারোটি মাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির দিকে ফিরে তাকিয়েছে সময়ের আলো।

ঘটনাবহুল ছিল সদ্যবিদায়ি বছর ২০২১। এসব ঘটনার বেশ কয়েকটি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে দেশের মানুষকে নাড়া দিয়ে গেছে। বছর শেষ হয়ে গেলেও জনমনে এখনও প্রভাব রয়ে গেছে ওইসব ঘটনার। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১০ ঘটনা বাছাই করেছে সময়ের আলো। 

এগুলো হলো- করোনা ও টিকা, ইউপি নির্বাচন, ডা. মুরাদের মন্ত্রিত্ব হারানো, কুয়েতে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের কারাদণ্ড, পরীমণি কাণ্ড, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবি, ঝালকাঠিতে লঞ্চে ও রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড, বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া এবং হেফাজতের তাণ্ডব ও মামুনুল কাণ্ড। অবাক করার বিষয় হচ্ছে- ২০২১ সালের প্রথম দিন ছিল শুক্রবার। আবার বছরের শেষদিনটিও শুক্রবার। এ এক আশ্চর্য রকমের মিল। 

করোনার করুণ দশায় ভরসা দিয়েছে টিকা : ২০২০ সালে মার্চ মাসে শুরু হওয়া করোনার রেশ ২০২১ সালে এসে কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেও টিকা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। বছরের একেবারে প্রথম দিকে অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে প্রথম টিকার ডোজ দেওয়া হয়। এই টিকা দেওয়ার বিষয়ে ভার্চুয়ালি সাহস জোগান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর চারদিকে শুধু টিকা আর টিকা নেওয়ার পালা শুরু হয়। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে চলে টিকা কেনা ও সংগ্রহ। বছর শেষে করোনা আবার নতুন রূপে দেখা দিলে শুরু হয় বুস্টার ডোজ। এই বুস্টার ডোজও প্রথম নিলেও সেই রুনু ভেরোনিকাই। 

এ ছাড়া করোনাকালে টানা ১৭ মাস বন্ধ ছিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চলতি শিক্ষা বছরের ৯ মাস শেষে ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজ। শিক্ষার্থীদের ফের শ্রেণিকক্ষে স্বাগত জানান শিক্ষকরা। তবে অনেকটাই পাল্টে যায় শ্রেণিকক্ষের চিরচেনা পরিবেশ। সারাক্ষণ মুখে মাস্ক। আর স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা, কোনো ঘাটতিও ছিল না তাতে। প্রতিবছর নতুন বছরের শুরুর দিন বই উৎসব হয়। এবার তা হলো না। শুধু তাই নয়, বছরের একেবারে শেষের দিন কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ছাড়াই বই উৎসব উদ্বোধন করলেন তিনি।

সহিংসতার শরবিদ্ধ ইউপি নির্বাচন : বিদায়ি বছরে গ্রামগঞ্জে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। গত ২১ জুন প্রথম ধাপ শুরু না হতেই বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক পক্ষ ও প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের কাছে বড় হয়ে দেখা দেয়। চতুর্থ ধাপ পর্যন্ত সহিংসা পিছু ছাড়েনি এ নির্বাচনের। আওয়ামী লীগের মধ্যে তৈরি হয় বিদ্রোহী গ্রুপ। 

এই ইউপি র্নিবাচনকে ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত অর্ধশতের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। শুধু কি তাই, ধাপে ধাপে এই র্নিবাচনের শুরু থেকে চলেছে প্রার্থীদের বিনাভোটে জয়ের হিড়িক। এসব কারণে নির্বাচন কমিশন এখন প্রশ্নবিদ্ধ। ইতোমধ্যে ৭৮১টি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনে। আমলে নেওয়া হয়েছে ২৫টি অভিযোগ। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ভোট পুনর্গণনা, ফলাফল বাতিল, ইভিএম পদ্ধতি চালু, ভোট জালিয়াতি বন্ধ করা। নতুন বছরের একেবারে প্রথমদিকে অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি থেকে যাচ্ছে পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন। 

নিজ বাক্যবাণে ধরাশায়ী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ : বছরের আলোচিত হিসেবে সবার মুখে মুখে ছিলেন- ডা. মুরাদ হাসান। তিনি তথ্য প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কথা বলে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আবার কখনও এমন সব বিতর্কিত মন্তব্য করতেন যা অনেকের কাছে ছিল অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু ফেসবুক লাইভে নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দেওয়া এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্যসংবলিত অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর তা ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়ে যায়। 

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই পদত্যাগ করে তিনি আত্মগোপনে থেকে দেশ ছেড়ে কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন। কানাডায় প্রবেশ করতে না পেরে আবার দেশে ফিরে আসেন। এ ছাড়া দুবাইয়েও থাকার চেষ্টা করেন, কিন্তু তা পারেননি। এখন দেশেই লোকচক্ষুর আড়ালে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। তার সংসদ সদস্যপদ থাকা না-থাকা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। 

পাপ ছুঁয়েছে পাপুলকে, কুয়েতে কারাদণ্ড : বিদায়ি বছরের শুরুতে আলোচিত ঘটনা ছিল লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের কুয়েতে কারাদণ্ড ও তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়া। অর্থ ও মানবপাচারের দায়ে পাপুলকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন কুয়েতের সর্বোচ্চ আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২৭ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় সাড়ে ৭৬ কোটি টাকা) জরিমানাও করা হয় তাকে। 

প্রথমে অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের মামলায় ২০১৯ সালের জুনে কুয়েতে গ্রেফতার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের একটি আদালত। এরপর দুপক্ষের আপিলের পর পাপুলের সেই সাজা বাড়িয়ে সাত বছর করে দেশটির উচ্চ আদালত। এ ঘটনার পর তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদ সচিবালয়।

বারবার আলোচনায় পরীমণি : ২০২১ সালের শোবিজকেন্দ্রিক ঘটনাবলির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। জুনে রাজধানী সংলগ্ন একটি ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে নাসিরউদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ফেসবুক লাইভে এসে এই অভিযোগ করেন পরীমণি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কাকতালীয়ভাবে অভিযোগ যায় পরীমণির বিরুদ্ধে। এরপর ৪ আগস্ট বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ ঘটনা লাইভ করে সব মিডিয়া।

অভিযোগ ছিল, বাড়িতে নিষিদ্ধ মাদক রেখেছিলেন পরীমণি। এরপর তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন পরীমণিকে আদালতে তোলা হলে তাকে চারদিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ১০ আগস্ট আবার মেয়াদ বাড়ানো হয় জেল হেফাজতের। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিদেশি গণমাধ্যমেও খবরেও শিরোনাম হন পরীমণি। এর মধ্যে অনেকেই তার পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেন। অবশেষে গ্রেফতারের ২৬ দিনের মাথায় জামিন পান তিনি। একপর্যায়ে আবার সিনেমায় ফিরে আসেন পরীমণি। সবশেষ হাইকোর্ট তার ফেসবুক থেকে আপত্তিকর ছবি সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পরীমণিকে। 

খালেদার চিকিৎসা ও মুক্তি, ফলাফল শূন্য : বিদায়ি বছরে রাজনীতিকেন্দ্রিক আলোচনার পুরোভাগে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছিয়াত্তর বছর বয়সি এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দুদকের মামলায় দণ্ডিত। বছরের প্রথম দিকে তার করোনা শনাক্ত হয়। এরপরই ভর্তি হন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে। পরে বাসায় নিলেও আবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। শুধু তাই নয়, তার শারীরিক অবস্থা এতই নাজুক হয় যে তাকে সিসিইউতে নিতে হয়। 

হাসপাতালে ভর্র্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি নানা জটিল রোগে ভুগছেন। এসব রোগের চিকিৎসা বিদেশে করানোর জন্য তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের একজন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে বিদেশে নেওয়ার আবেদনও করেন। কিন্তু সব কিছু আটকে যাচ্ছে আইনের মারপ্যাঁচে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পল্টনে অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। বিদেশে চিকিৎসার দাবি নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

বিষয়টি বিবেচনা করা হবে, আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যে অনেকে আশ্বস্ত হলেও বিএনপি আশ্বস্ত হতে পারেনি। ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি একপর্যায়ে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সংসদও উত্তপ্ত করেছেন বিএনপি সংসদ সদস্যরা। কেন বিদেশে যেতে পারবে না তার ব্যাখা দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে সরকারকে মানবিক হতে বলেছে বিএনপি। আইনমন্ত্র্রী তার মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও তেমন কিছু অগ্রগতি নেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে।

অগণিত তাজা প্রাণ ঝড়েছে দুর্ঘটনায় : বিদায়ি বছরের ভয়ানক কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে দেশে। এগুলোর মধ্যে মধ্যে সবচেয়ে মর্মন্তুদ হলো ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি-১০-এ অগ্নিকাণ্ড। ইতোমধ্যে এ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও বাতাসে ভাসছে নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। 

ইতোমধ্যে লঞ্চেরমালিক গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু এরপর? এ প্রশ্নের হয়তো কখনোই জবাব দেবে না কেউ? মুন্সীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে আরও একটি লঞ্চডুবির ঘটনা বিদায়ি বছরে। গত ৪ এপ্রিলে এ দুর্ঘটনায় মারা যায় ২৯ জন। এরপর গত ২৬ জুন পদ্মানদীতে স্পিডবোট র্দুঘটনায় প্রাণ হারায় ৪২ জন। মালিকের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড কারখানায় লাগা আগুন কেড়ে নেয় ৫৫ হতভাগ্যের প্রাণ। রাজধানীর মগবাজারেও একটি বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণ ঘটে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

পূজামণ্ডপে হামলা, অগ্নিসংযোগ : হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে দেশের অনেক স্থানে চলে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে প্রতিমা ভাঙচুর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সারা দেশে এই প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে সরকারের কঠোর নজরদারিতে তা প্রশমিত হয়। তবে সাম্প্রদায়িক এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হয়। 

জ্বালানি তেলের মূল্য ও বাসভাড়ায় নাকাল জনগণ : সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিলে ক্ষুব্ধ হয় সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার সুযোগে বাস মালিকরা বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। কৌশল হিসেবে তারা তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে যাত্রীদের জিম্মি করে বাস চলাচল বন্ধ রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। 

এ নিয়ে প্রতিবাদের একপর্যায়ে রাজধানীতে চলাচলকারী রাইদা পরিবহন থেকে এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এরপর থেকে শুরু হয় হাফ পাসের আন্দোলন। এ সময় সিটি করপোরেশরেন ময়লার গাড়িতে মৃত্যু হয় নটরডেম কলেজের ছাত্র নাইমের। ওই ঘটনায় হাফ পাসের সঙ্গে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনের মধ্যে আরেকটি বাসের চাপায় নিহত হয় এক শিক্ষার্থী।

এই সময় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এমনকি বিআরটিএ অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় বেশ কিছু বাস ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একসময় হাফ পাস মেনে নেওয়া হলেও শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেয়নি। কারণ হাফ পাস কার্যকর করা হতো শুধ ঢাকায়। শেষমেশ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ ৫ ডিসেম্বর থেকে দেশের সব মহানগরে চলাচলকারী বাসের শিক্ষার্র্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়ার ঘোষণা দেন। আর ১১ দফার দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়ে ঘরে ফেরে শিক্ষার্থীরা। 

প্রত্যাবাসন ঠেকাতে রোহিঙ্গা নেতা মহিব্বুল্লাহ হত্যা : সরকারের জন্য একটি গুরুত্ব ইস্যু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন- রোহিঙ্গা নেতা মহিব্বুল্লাহ। শুধু তাই নয়, আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তাকে বিদায়ি বছরে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি ২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সাক্ষাতে দ্রুত রোহিঙ্গা মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সহযোগিতা চান। এ ছাড়াও তিনি জেনেভায় জাতিসংঘে মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। 

হেফাজত নেতা মামুনুল কাণ্ড : বছরের একটি ন্যকারজ্জনক ঘটনা ছিল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নেতা মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারি। নারায়ণগঞ্জের এক রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সে সময় জনগণের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে অবশ্য পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। মামুনুল হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজত।

এ ছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জমি ও গৃহ প্রদান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জাতিসংঘের সুপারিশ, ইউনেস্কোর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একসঙ্গে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক প্রবর্তন, মুক্তিযুদ্ধ পদক প্রবর্তনসহ বেশকিছু আলোচনায় ছিল বিদায়ি বছরে।

এফএইচ



আরও সংবাদ   বিষয়:  বিদায়ি বছর  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close