প্রকাশ: শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:১১ পিএম (ভিজিট : ৩৯৫)
‘পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর সম-অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’ স্লোগানে শেষ হলো জাতীয় মহিলা পরিষদের ১৩তম জাতীয় সম্মেলন। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হলেও এবার দেশের ৫৫টি জেলা থেকে প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। দুইদিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হয় শুক্রবার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সম্মেলনে ৫৫টি জেলা শাখা থেকে অংশ নেন ৪৮০ জন কাউন্সিলর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, মহামারির কারণে গত দুই বছর এ সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আমাদের এবারের সম্মেলন সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, সংগঠনের ৫১ বছরের পথচলায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেখা যাচ্ছে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হয়েছে। তবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর কাজের স্বীকৃতি ও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হয়নি। গণতন্ত্র, সুশাসন ও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়নি। করোনাকালীন সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে উদ্বেগজনকভাবে। করোনার অযুহাতে মুক্তচিন্তার সুযোগ সংকুচিত হয়েছে।
প্রথা ও ধর্মের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্র এখনো নারীর প্রতি সহিংসতার সংস্কৃতি অনুমোদন করে। জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবস্থান নিশ্চিত করতে জিডিপিতে এর মূল্যায়ন অত্যন্ত জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম প্রয়াত সকল নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, সংগঠনের ৫২ বছরের পথচলায় অনেক অর্জন আছে, অগ্রগতি আছে, চ্যালেঞ্জ আছে। উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে নারীর অবদান থাকলেও নারীর অবদানের স্বীকৃতি এবং অংশীদারিত্বের স্বীকৃতি এখনো আসেনি। নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করে প্রকৃত উন্নয়ন ঘটাতে হলে উন্নয়নের মূলধারায় নারীকে যুক্ত করতে হবে, নারীবান্ধব হতে হবে রাষ্ট্রীয় নীতি, বাস্তবায়নকারীদের হতে হবে জেন্ডার সংবেদনশীল। সম্পদ-সম্পত্তিতে নারীদের সমঅধিকার দিতে হবে, সিডও সনদের ধারা ২ এর উপর থেকে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করতে হবে।
গত আট মাসে যারা সাহস যুগিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম বলেন, মহিলা পরিষদ ৫২ বছর ধরে নারীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীরা এখনো পিছিয়ে আছে। যেকোনো সহিংসতার ঘটনায় নারীদের হেনস্থার শিকার হতে হয়, তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। রোজিনা ইসলাম আরও বলেন, জেল থেকে বেরিয়ে আমি আরও সাহসী হয়ে উঠেছি।কারণ এতো মানুষ তাকে সমর্থন দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শুভেচ্ছা বাণী পাঠান। বক্তব্য শেষে র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউট থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে এসে শেষ হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় পরিষদ সভা ও ১ম কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
/আরজেড/এমএইচ/