ই-পেপার বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে গণতন্ত্রের জয় হোক
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:১৭ এএম  (ভিজিট : ৩০৮)
১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে রাজধানীর পড়শি এই বন্দর ও শিল্পনগর শুধু নয়, তাকিয়ে আছে সারা দেশের মানুষ। নির্বাচন কমিশনের ওপর দেশবাসীর আস্থা ক্রমাগতভাবে কমলেও নারায়ণগঞ্জের বিগত সিটি নির্বাচনগুলোয় তার ছাপ পড়েনি। দেশে যে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব তা নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচনে এ যাবৎ প্রমাণিত হয়েছে। সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কঠিন পরীক্ষা হবে রোববারের নির্বাচনে। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই মেয়র প্রার্থী সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। টানা গণসংযোগে থাকা আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন মানুষ ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে। বলেছেন, সুন্দর নির্বাচন হয়েছিল বলেই আগেরবার জিতেছিলাম। 

একই দিন বর্ণাঢ্য র‌্যালি করা হাতি মার্কার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার মেট্রো হল মোড়ে বলেছেন, পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ- আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। আশা করি, নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেবে। নির্বাচনে যেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে এবং কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং না হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন। তীব্র শীতের মধ্যেও নির্বাচনি উত্তাপ অনুভূত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সর্বত্র। মেয়র পদের দুই প্রার্থী জনবান্ধব রাজনীতিক হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। নির্বাচনে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। আমরা চাই নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর দেশের মানুষের আস্থা ফেরাতে নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন সদিচ্ছার পরিচয় দেবে। ব্যক্তি বা দল নয়, গণইচ্ছা ও গণতন্ত্রের জয় হবে। নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন হোক সবার জন্য অনুকরণীয়।

নির্বাচন মানেই উৎসব। সচেতন নাগরিক হিসেবে ভোটাধিকার প্রয়োগে ভিন্ন ধরনের আনন্দ ও গৌরব বোধ করে মানুষ। ভোট মানে রাজনৈতিক উত্তাপ, চায়ের কাপে ঝড়। যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব থেকে কার্যকর রক্ষাকবচ। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে, এমনটিই প্রত্যাশা করি। নগরবাসীও নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করে বেছে নেবে তাদের কাক্সিক্ষত মেয়র ও কাউন্সিলরদের। 

আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। কেউ চায় না নির্বাচন কেন্দ্রে কোনো সংঘাত হোক, কোনো রক্তপাত হোক এবং কোনো রকমের প্রাণহানি হোক, ভোট লুটপাট হোক। এ ছাড়া প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনও জনগণ কামনা করে না। ভোটের অধিকার প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি নাগরিকের। সবাই যেন আনন্দচিত্তে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সে নিশ্চয়তা নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনকারীদের দিতে হবে। এবং নির্বাচনের পর রাজধানীতে যেন কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। আপামর জনগণের প্রত্যাশাও তাই। নির্বাচনের আগে ও পরে আপনাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা ভালো ভূমিকা থাকতে হবে। এই সিটি নির্বাচনে কেউ জিতবেন, কেউ হারবেন। যারাই জিতুক, শান্তিপূর্ণ ও অবিতর্কিত নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হলে দলের জয় গণতন্ত্রের জয় বলে প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, কোনো জাতীয় রাজনীতির চাপে এই নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যকে যেন প্রভাবিত করা না হয়। তাই সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারা এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে।

আমরা অশান্তি চাই না। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। জনপ্রত্যাশা ইসি সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের ভিত রচনা করেছিলেন। গণতন্ত্রের মূলভিত্তি নির্বাচন। এই নির্বাচনসহ সব নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয় এই প্রত্যাশা সবার।

সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close