ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মার্ট আইডি কার্ড পাচ্ছেন ২৫ মার্চ
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:২৫ এএম  (ভিজিট : ৬৬০২)
বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মার্ট সনদ ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মার্ট আইডি কার্ড পাচ্ছেন। আগামী ২৫ মার্চ সারা দেশে একযোগে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড বিতরণ করা হবে নিজ নিজ উপজেলায়। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার নামে ইস্যুকৃত স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে যাবে। এজন্য প্রয়োজন হবে না কোনো আবেদন বা ফরম পূরণের। যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তারা নিজ নিজ উপজেলা থেকে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড একই দিনে সংগ্রহ করবেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড দেওয়া কথা থাকলেও, সেটি চলতি বছরের ২৬ মার্চের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৫ মার্চ সারা দেশে ১ লাখ ৩ হাজার জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মার্ট আইডি কার্ডের আওতায় আসছেন। একই সঙ্গে ১ লাখ ৮০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পাচ্ছেন স্মার্ট সনদ। প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে। এই স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি যানবহনে বিনামূল্যে চলাচলের সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন তারা। চিকিৎসাসেবা বলতে সব ধরনের ডাক্তারিসেবা, শল্যচিকিৎসা, ওষুধ ক্রয় ও সরবরাহ, বেডভাড়া, খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ এবং সেবিকার সেবা চিকিৎসাসেবার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সময়ের আলোকে বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড দিতে পারব। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমরা তা করতে পারিনি। তবে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা চলতি বছরের ২৬ মার্চ। যেহেতু ২৬ মার্চ সবাই স্বাধীনতা দিবস পালন করবে। তাই আমরা ওইদিন না করে ২৫ মার্চ সারা দেশে একযোগে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড বিতরণ করব। নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ২৫ মার্চের আগে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড পাঠিয়ে দেব। বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার নিজ নিজ উপজেলা থেকে এগুলো সংগ্রহ করবেন। এই স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ডের হার্ট কপি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মার্ট সনদ ও কার্ড পাওয়া মানে, তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এটাই তার বড় পরিচয়। এটি পেলে তাদের আর পরিচয় দিতে কোনো বেগ পেতে হবে না। আইডি কার্ড দেখালেই হবে। তারা সরকারি যানবাহনে পাবেন ফ্রি যাতায়াতের সুবিধা। এর মধ্যে রেল ও বাসে তারা বিনামূল্যে চলাচল করতে পারবেন। 

মোজাম্মেল হক বলেন, এই স্মার্ট আইডি কার্ডের কারণে অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেবে সরকার। রাজধানীর নামিদামি হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য ‘মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসাসেবা প্রদান নীতিমালা’ নামে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা চিকিৎসায় মরতে হবে না। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন। এ ছাড়া রাজধানীতে ১৫টি বিশেষায়িত হাসপাতালে তারা বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা পাবেন। বিশেষায়িত যেসব হাসপাতালে তারা চিকিৎসাসেবা পাবেন সেগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় পঙ্গু হাসপাতাল, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যেসব হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্ধারণ করবে ওইসব প্রতিষ্ঠানে।

স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ডের প্রকল্প পরিচালক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. দুলালকৃষ্ণ রায় সময়ের আলোকে বলেন, আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আমরা প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মার্ট সনদ ও আইডি কার্ড পৌঁছে দেব। এগুলো ধাপে ধাপে দেওয়া হবে না। সব বীর মুক্তিযোদ্ধা এক সঙ্গে পাবেন। এজন্য কোনো আবেদন বা ফরম পূরণ করতে হবে না।

এর আগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছিলেন, দেশে গেজেটভুক্ত ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম যুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৩৫ হাজার জনের বেসামরিক গেজেটে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের অনুমোদন না থাকায় তাদের এই তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে। ২০০২ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে যাদের নাম বেসামরিক গেজেটে প্রকাশিত হয়েছিল যাচাই-বাছাই করে প্রায় ১০ হাজার বেসামরিক গেজেট বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন অন্তর্ভুক্তি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম বাতিল সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ এপ্রিল থেকে ৪ মে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট সনদ ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট আইডি কার্ড তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করে।

/জেডও/


আরও সংবাদ   বিষয়:  বীর মুক্তিযোদ্ধা   ২৫ মার্চ   




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close