এই প্রজন্মের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সোমনূর মনির কোনাল। ইতোমধ্যে সঙ্গীত ভূবনে এক যুগের বেশি সময় পার করেছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছেন এই কণ্ঠশিল্পী। বর্তমানে প্লেব্যাক, মৌলিক গান ও কনসার্ট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কোনাল। তার গায়কী উচ্চারণ অনেককেই মুগ্ধ করেছে। সম্প্রতি পিজিত মহাজনের সঙ্গে গান একটি দ্বৈত গান করেছেন তিনি।
নতুন গান প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, ‘গাঙচিলের ব্যানারে বড় আয়োজনে একটা এক্সক্লুসিভ গান করেছি। গানটিতে আমার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন মার্সেল। গানটির কথা লিখেছেন লুৎফর রহমান ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন মার্সেল। এরই মধ্যে গানের মিউজিক ভিডিও করা হয়েছে। আশা করি, শ্রোতাদের গানটি অনেক ভালো লাগবে।
মেলোডিয়াস গান করতে ভালোবাসেন কোনাল। গত দুই ঈদে আটটি নাটকে গান করেছেন। সুন্দরী এই গায়িকা জানান, নাটকের গানগুলো ভিন্নভাবেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এখন তো বেশিরভাগ নাটকে এটি করে থাকে। দেখতে ভালোই লাগে।’ শিগগিরই একটি সিনেমায় কণ্ঠ দেবেন কোনাল। তবে সিনেমার নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে গত মাস পর্যন্ত টানা স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন কোনাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনার পর অনেক স্টেজ শো করেছি। আগস্ট শোকের মাস, এই মাসে স্টেজ শো বন্ধ। সেপ্টেম্বর মাস থেকে আবারও স্টেজে ব্যস্ততা বাড়বে। শ্রোতারা অপেক্ষায় থাকে কখন একজন ভালো শিল্পীর গান শুনবে। একেবারে অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায় কনসার্টে। সকল বয়সের শ্রোতা থাকে। সেখানে বোঝা যায় আমার কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা আছে।’
স্টেজ শো নিয়ে ভালো লাগা থাকলেও স্টুডিও লাইভ কনসার্ট নিয়ে আক্ষেপ আছে কোনালের। তিনি বলেন, ‘টেলিভিশনে লাইভ কনসার্টে বাজেট অনেক কম। এই বাজেটে আমি কাজ করতে ইচ্ছুক নই। সবাই জানে পারিশ্রমিকের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেই না। আমি তো কোনো বেতন পাই না। একজন শিল্পী যেটা পায় সেটা হলো সম্মানি। আর সম্মানির ব্যাপারে কেন ছাড় দেব। তবে কোভিডের মধ্যে ছাড় দিয়েছি। সেই সময় পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল। এখন কোয়ালিটি ধরে রাখার সময়। এ ছাড়া টিভি লাইভে গাইলে শিল্পী অনেকটা সহজলভ্য হয়ে যায়। আমি এই বিষয়টা চাই না। ’
গানের রয়্যালিটির প্রসঙ্গ টেনে কোনাল বলেন, ‘টেলিভিশন লাইভ শোগুলোতে একই গান রেকর্ড করে বারবার প্রচার করা হচ্ছে। টিভির জন্য গাওয়া গান তাদের ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার পেজেও ছাড়ে। সেক্ষেত্রে শিল্পীর সাইনও নেয় না তারা। এই ডিজিটাল রাইট কি শিল্পী দিয়েছে? ডিজিটাল রাইট, রি ব্রডকাস্টিং রাইট একজন শিল্পী কি পায়? এই কারণে আমাকে লাইভে পাওয়া যায় না।
অডিও গান এখন আর আগের মতো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না। কিন্তু কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কোনাল বলেন, ‘একটি গান শোনার পর শ্রোতারা ওয়াও করবে, এমনটা শেষ কবে হয়েছে সেটা মনে করা কঠিন। সাম্প্রতিক সময়ে কিছুই গান ভাইরাল হচ্ছে। সাময়িকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। তবে মনের মধ্যে থাকছে না। কেন হচ্ছে না সেটা আমি নিজেও জানি না। তবে কিছু গান আছে যেগুলো প্রচারের অভাবে শ্রোতাদের পর্যন্ত পৌঁছায়নি। আবার শ্রোতাদেরও দায়িত্ব আছে। ভাইরালের পেছনে না ছুটে আগে গান শোনা উচিত। মাঝেমধ্যে গান গাইতে ভয় করে। প্রশ্ন ওঠে মনের মধ্যে মানুষ গান শুনবে তো। গান শোনার ধৈর্যটাও আমাদের নেই।’
গান নিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে কোনাল জানান, গানকে ভালোবেসে কুয়েত থেকে এসেছি। গানের জন্য আমার মধ্যে এক ধরনের প্যাশন কাজ করে। আজীবন গানটা করতে চাই।
গাওয়ার পাশাপাশি গান নিয়ে গবেষণাও শুরু করেছেন এই সুকণ্ঠী গায়িকা। এই বিষয়ে কোনাল বলেন, ‘গান নিয়ে গবেষণা করছি। সাধারণ মানুষের জীবনে গানের অনেক প্রভাব রয়েছে। যেমন আমাদের মন খারাপ কিংবা ভালো থাকলে গান শুনি। গান মানুষের জীবনের সঙ্গে কতটা জড়িয়ে সেটা অনুধাবন করাতে চাই।’
প্রতিনিয়ত সঙ্গীত সাধনা করে কোনাল এগিয়ে চলছেন স্বপ্নের পথে। তার গানের সুরের সুধায় মেতে উঠবে শ্রোতাদের হৃদয়। এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
/আরএ/