প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪:০২ এএম আপডেট: ২৩.০৯.২০২২ ৪:৫৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 145
চাঁদপুরের আলোচিত-সমালোচিত ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের জমিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত তাকে চার সপ্তাহের এই আগাম জামিন দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় বুধবার এই জামিন পেলেন সেলিম।
বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে সেলিম খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান।
৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলায় গত ১৪ আগস্ট তিন সপ্তাহের মধ্যে সেলিম খানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এই সময়ের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে না পারায় সেলিম খান পুনরায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান বাদী হয়ে গত ১ আগস্ট মামলা করেন। ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ এই মামলা করে দুদক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
কমিশন সচিব জানান, অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সভায় সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সেলিম খানের ইউনিয়নের মেঘনা পারে একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলেমেয়েসহ অন্য জমির মালিকরা অস্বাভাবিক মূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা।
অস্বাভাবিক মূল্য নিয়ে জেলা প্রশাসকের তদন্তে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করার পরিকল্পনা ধরা পড়ে। পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। এই নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
চাঁদপুর ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করায় চেয়ারম্যান সেলিম খানকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরের নদী অঞ্চল থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ওই চেয়ারম্যানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়াই তিনি বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন। সবশেষ ৬ এপ্রিল সেলিম খানের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যাচাইয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুমিল্লার সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা’দাতের নেতৃত্বে কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক টিম।