ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মানুষের ভালোবাসার নিদর্শন পাখিপল্লি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:৫২ এএম  (ভিজিট : ১৭০)
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে বাসা বেঁধেছে বিরল প্রজাতির শামুকখোল পাখি। গ্রামবাসীও অতি যত্নে আগলে রেখেছে পাখিদের। নিরাপদ আশ্রয় আর মানুষের ভালোবাসায় গ্রামে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে পাখির সংখ্যা। ছয় বছর স্থানীয় প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালোবাসায় ঘন বাঁশঝাড়, আমগাছ, শিমুলগাছসহ অর্ধমাইল জঙ্গল হয়ে উঠেছে শামুকখোল পাখির নিরাপদ আশ্রয়। জানা গেছে, খাল বিলের ছোট ছোট শামুক ঝিনুক, ছোট মাছ, আর ফসলের মাঠের পোকামাকড় খেয়ে জীবন বাঁচায় শামুকখোল পাখি। এলাকার মানুষের কাছে এ পাখি শামুকভাঙা, হাই তোলা মুখ এসব নামেও পরিচিত। স্থানীয় মানুষের সচেতনতায় বর্তমানে নিরাপদ আশ্রয়ে বেড়ে উঠছে পাখিগুলো। পাখি শিকারিদের ঠেকাতে সবাই অত্যন্ত সচেতন। ডিম ও বাচ্চা রক্ষায় সচেষ্ট গ্রামবাসীর একান্ত প্রচেষ্টায় নিরাপদে বাড়ছে পাখির সংখ্যা। শীত মৌসুমে শামুকখোল পাখি অন্যত্র চলে যায়। এ সময় প্রায় তিন-চার মাস এদের দেখা মেলে না। 

সরেজমিন দেখা যায়, খুব ভোরে পাখিগুলো জেগে ওঠে কিচিরমিচির করে। সকাল-বিকাল এক সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পাখিগুলো ডানা মেলে উড়ে যায়। পোকামাকড়সহ খাদ্যের খোঁজে মাটিতে নেমে আসে। আর বেশিরভাগ সময়ই বিলে-ঝিলে এদের দেখা মেলে। সন্ধ্যার আগে আগে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা নীড়ে ফেরে। এভাবেই ছয় বছর ধরে গ্রামবাসীর পরম মমতায় তাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপনে মিশে আছে পাখির কিচিরমিচির। হেলাল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, শীতকালে আরও অনেক প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এই গ্রামে। আর গরমকালে শামুকখোল পাখি প্রজনন দেওয়ার জন্য বাসা বাঁধে। লোকালয়ে শামুকখোল পাখির বিষ্ঠা ছড়ায়। গাছের পাতা নষ্ট হয়ে যায়। ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যায়। গাছের ফল আম, জলপাই, আমড়া এগুলো আমরা খেতে পারি না। তবে এসব মেনে নিয়েছে সবাই, কেউই বিরক্ত হয় না।
 
গৃহবধূ মোমেনা বেগম বলেন, ‘বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে শামুকখোল পাখির বাসা, ক্ষুধা পেলে অনেক সময় বাড়ির উঠানে চলে আসে। চাল, খুদ, ভাত খায়। অন্যরকম এক মায়া পড়ে গেছে পাখির ওপর।’ গ্রামের বাসিন্দা বায়েজিদ সরকার ও সাবেক ইউপি সদস্য হামেদুর রহমান জানান, গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার দুপাশে জলপাই, আকাশমনি, বাঁশঝাড়, শিমুল ও আমগাছ এবং জঙ্গলে পাখি বাসা তৈরি করে।
 
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামবাসীর পাশাপাশি রামনগর গ্রামে পাখির অভয়ারণ্য গড়তে আন্তরিকতার কোনো কমতি থাকবে না। প্রশাসনের দিক থেকে যতখানি সহযোগিতা দরকার সবই করব আমরা। গ্রামের এই পাখি ও মানুষের বন্ধুত্ব দেখে এই গ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পাখিপল্লি’।


আরও সংবাদ   বিষয়:  শামুকখোল পাখি  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close