প্রকাশ: বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২, ৭:১৭ এএম (ভিজিট : ১৪৯)
করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পোল্ট্রি খাত থেকে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র খামারিরা। এর মধ্যে চুক্তিবদ্ধ খামারের নামে প্রান্তিক খামারিদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প ও চেক নিয়ে প্রতারণা করে করপোরেট কোম্পনিগুলো বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদার।
তিনি বলেন, ‘চুক্তিবদ্ধ খামার করতে না চাইলে খামারি এবং ডিলারদের বিরুদ্ধে করপোরেট কোম্পানিরা চেক ডিজঅনার মামলা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর মধ্যে প্রমাণ হয় ৭১ফিড কোম্পানি+আলাল গ্রুপ বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত কোটি টাকা খামারিদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নিয়েছে। শুধু রংপুর জেলায় চুক্তিবদ্ধ পোল্ট্রি খামারিদের কাছ থেকে ১২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং অনেক খামারি দেউলিয়া হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন জানাই যাতে প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখার জন্য সব প্রকার লেনদেনে ব্ল্যাংক চেক জমা নেওয়ার ব্যাপারে সরকার তদারিক করে ব্যবস্থা নেয় এবং প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে। যাতে সব খামারি টিকে থাকতে পারে এবং দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ করে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডিমের খামার রেট স্থান বুঝে সাত টাকা থেকে আট টাকা ৪০ পয়সা যা উৎপাদন খরচের চেয়েও দুই টাকা ১০ পয়সা কম। ফলে প্রতিদিন খামার মালিকদের লস গুনতে হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম খামার রেট ১২০ থেকে ১২৫ টাকা হলে ভোক্তারা ১৬০-১৭০ টাকা কেজিতে কিনছেন। উৎপাদন খরচ ১৪৫-১৫০ টাকা হলেও প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা লস হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে এখন বছরে ডিমের চাহিদা সাড়ে চার কোটি, উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৫ কোটি। তারপরও সংকট দেখিয়ে ডিম আমদানি করতে চায় একটি সিন্ডিকেট। টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে ডিম আমদানির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। দেশের প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে এ চক্রটিকে ডিম আমদানির অনুমোদন না দেওয়াসহ সরকারের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছে খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
দাবিগুলো হলো-অসাধু সিন্ডিকেট থেকে পোল্ট্রি সেক্টরকে রক্ষা করতে হবে। ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া যাবে না। খাদ্যের ওপর সরকারি ভর্তুকিসহ অন্যান্য ফ্যাসিলিটি বাড়িয়ে মূল্য কমাতে হবে। পোল্ট্রি নীতিমালা প্রণয়নসহ পোল্ট্রি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করতে হবে। খামারিদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। সহজ শর্তে ব্যাংক লোন এবং ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।