আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলায় প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
তাদের অভিযোগ, আগামী ৩ ডিসেম্বরের রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশে বিএনপির জনস্রোত ঠেকাতেই বিভাগের ৮ জেলায় গত তিন দিনে ৭৫ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা দায়ের করেছে সরকার দলীয় প্রশাসন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এ অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, সরকার জোর করে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তারা রাজশাহী বিভাগের বিএনপির নেতাকর্মীদের এ আন্দোলনকে ঠেকাতে চাইছে। সরকার ও সরকার দলীয় প্রশাসন জানে- রাজশাহীর মাটি, বিএনপির ঘাটি। তাই তারা রাজশাহীর বিভাগীয় এ গণসমাবেশকে নসাৎ করতেই এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাজশাহী বিভাগের বগুড়ায় ছয় মামলায় ১৯ জনকে, জয়পুরহাটে দুই মামলায় ১২ জন, নওগাঁয় ছয় মামলায় ১৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ মামলায় ২২ জন, রাজশাহীতে চার মামলায় দুইজন, নাটোরে ৫ মামলায় তিন জন, সিরাজগঞ্জে ৩ মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আগের সমাবেশগুলোতে ধর্মঘট, গাড়ি-ঘোড়া লঞ্চ চলাচল বন্ধ করেছিল। তবে কোনওভাবেই লোকসমাগম ঠেকাতে পারছিল না। এবার রাজশাহীর গণসমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে সরকার গ্রেফতার ও মামলা চালু করেছে। গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে পুলিশ সরাসরি বিস্ফোরক, অস্ত্র, নাশকতার মামলা দিচ্ছে। গত তিনদিনে রাজশাহী বিভাগে জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার। বিএনপির যে নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাকেই এসব মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।
এ পর্যন্ত ৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব মামলা ও গ্রেফতার করে নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করা হচ্ছে। যারা এলাকায় থাকছেন তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করেও আগামী ৩ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সরকার বন্ধ করতে পারবে না। বরং গণসমাবেশ আরও ভালো হবে, সফল হবে বলে দাবি বিএনপির এ নেতার।
এদিকে বুধবার রাজশাহী পুলিশ লাইনসে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূল শীর্ষক এক সভায় বাংলাদেশ পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, দেশে আবারও কেউ অরাজকতা ও আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতীতের মতো আবারও তাদের দমন করা হবে।
পুলিশের আইপিজির এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিএনপির উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, মূলত প্রশাসনের গুটি কয়েক লোক সরকারের সমর্থন করছে। যারা এমন কাজ করছেন, তারা সরকার দলীয় লোক বলেই আমরা মনে করি। তারা জনগণের সেবা না করে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
/জেডও