এ সপ্তাহের কবিতা
|
![]() বিমল গুহ পৃথিবীকে ভালোবেসে মৃত্যুব্যূহ থেকে ফিরে আসি- একবার দুইবার, তিন-এইভাবে। এই পৃথিবীর রূপ অন্য-অন্য গ্রহ থেকে কিছুটা আলাদা বারংবার বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের মায়ার নানা মন্তব্য শোনায় আমাদের। মঙ্গলের কথা ওঠে মঙ্গল তো লালগ্রহ-উষ্ণ উষ্ণ বায়ুস্তর মানুষের জন্য খুব উপযোগী নয়। যদিও জেনেছি আগে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পরিপূর্ণ নানা জীবাণুতে- কিন্তু তা জীবিত প্রাণের জন্য বড় বেশি ক্ষতি ডেকে আনতে পারেনি! বরং আমরা দেখি চক্রাকার ঘূর্ণাবর্তে প্রকৃতির তাণ্ডব নেমে এসেছে এখানে-প্লেগ, ফ্লু, কলেরা কিংবা নানা কিছু! তবু এই গ্রহটিকে ভালোবেসে মরিবার সাধ নাহি হয়! পৃথিবীর মায়ার বাঁধন বড় লোভনীয়- দিনের উল্লাস আর আঁধারের শোভা আমাদের জাগিয়ে রেখেছে; পৃথিবীর মোহচক্র শিশিরের ঘ্রাণ; শৈশব-কৈশোর ভরাবেলা দীর্ঘ বালুচর আমাদের দিয়েছে আশ্বাস- পৃথিবীতে ভালোবেসে বারবার মৃত্যুব্যূহ থেকে ফিরে আসি। তোমার আমার সিদ্ধান্ত গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল কেউ ডাকবে কেউ করবে ঈর্ষা তারপরও যেতে হবে গন্তব্যে দিগন্তের শেষে না হোক সীমান্তের কাছাকাছি। একদিন আমিও ছিলাম তুমি ছিলে সেও। আজ তারা এবং সে আছে ভবিষ্যতে অন্য কেউ। ভয়ের কিছু নেই- তুমি আমি এক থাকলে শত্রু কী করবে বলো, তোমার আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বাড়ি বিনয় কর্মকার একদিন সেনগুপ্ত দিদি বলছিলেন- আমার ফ্ল্যাটের এই ব্যালকনিটা আমার খুব প্রিয় জায়গা। সকালে ঘুম থেকে উঠে এখানটায় এসে বসি, বুলবুলির ডাক শুনি টুনটুনির ডাক শুনি ঘুঘুর ডাক শুনি দোয়েল, চড়ুই আরও কত-শত পাখি আসে, রাতে লক্ষ্মীপেঁচা- গরমের দিনে হাওয়া খাই বর্ষায় আকাশে কালো মেঘেদের আনাগোনা, অঝোর ধারার বৃষ্টি- শরতে রোদ-মেঘে লুকোচুরি, রাতে পূর্ণিমার চাঁদ। শীতের সকালে মিষ্টিমাখা নরম রোদ সেনগুপ্তদি যখন বললেন- আমার মনে হয়, সবারই তার বাড়ির কোনো একটা জায়গা বেশ ভালো লাগার থাকে। আমি শুধু বলেছিলাম- সবার তো বাড়ি থাকে না! ভুবনপুরের বালক আলম মাহবুব ভুবনপুরের বালক, তোমাকে দিলাম পাতার বাঁশি উত্তরে দক্ষিণে কিংবা উত্তর-দক্ষিণ বাঁচিয়ে পাহাড়ের শীর্ষদেশে উঠে যাও তুমি। আকাশের মেঘে রংধনুর সাত রং ঝিলিমিলি সমুদ্রের ঢেউ হেমন্তের শিশির পকেট ভরে রাত্রির মিটমিটে জোনাকির আলো তুমি যাও গাঙুরের জলে ভাসানো বেহুলা ভেলায় শিশির ভেজা পথের সবুজ ঘাসে দীঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে দয়িতা অপেক্ষায় তোমার বুক তার পোড়া লাল আগুনের শীষে চেতনার খামে ভরা স্মৃতির চিঠি গহিনে কোথাও জ্বলছে হরিৎ আবেগের মন-প্রেম। ভুবনপুরের বালক, তোমাকে দিলাম পাতার বাঁশি বিবিধ এ বন্ধুর সীমানায় হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতোন সুর বাজাও। কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়ে যায় কেন? দুপুর মিত্র কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়ে যায়। চাইলেও আর করা হয়ে ওঠে না। মনে হয় করব, তারপর ভুলে যাই। এর কারণ হয়তো এই যে কিছু কাজ করার পর আগ্রহটা কমে যায়। মনে হয় এসব করে কী হবে আর। হয়তো এই কারণে যে কিছুদূর বাতাস এগিয়ে এসে ঘুরে যায়। মনে পড়ে এই গ্রামে বাজে শুধু দুঃখের সেতার। কিছু কাজ আর হয় না। চেয়ে দেখি পড়ে আছে যত্রতত্র। কেননা কিছু কাজ কখনই শেষ হবে না। কিছু কাজ ভুলে ভরা, ইচ্ছে করে তোমার সামনে পড়া ভুল মন্ত্র।
|