ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

লুটপাট আড়াল করতে চাইছে সরকার: সাকি
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ৯:৫৭ পিএম আপডেট: ০২.১২.২০২২ ৯:৫৯ পিএম  (ভিজিট : ১৪৯)
সরকারের ফুটো বেলুনের উন্নয়ন দেশের বেশিরভাগ মানুষের উন্নতি করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সরকার সব দোষ যুদ্ধের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের দোষ, নিজেদের লুটপাট আড়াল করতে চাইছে বলেও মনে করেন তিনি। 

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এ দেশের শ্রমিকরা উৎপাদন করে যাচ্ছেন, কৃষি ও শিল্প চলছে, উৎপাদন বাড়ছে। এ শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর জন্য পাঁচ বছর পরপর মজুরি বোর্ড গঠন করে মজুরি বাড়ানো হয়। কিন্তু দেশে এখন একটি দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলছেন। এ রকম জরুরি সময়েও শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের ফুটো বেলুনের উন্নয়ন দেশের বেশিরভাগ মানুষের উন্নতি করতে পারবে না।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আইয়ুব খান বা এরশাদের মতো বড় বড় কাঠামো তৈরি করে যে উন্নয়নের মডেল দেখাচ্ছেন, সাধারণ কৃষক, পোশাক শ্রমিক বা দিনমজুরের জীবনে এই উন্নয়নের কী প্রভাব তৈরি হলো; তাদের জীবনে কী উন্নয়ন হলো; সেটিই আসল বিচারের বিষয়। যারা উন্নয়নের কারিগর, তাদের জীবনকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। সভাসদরা দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলছে। এই লুট ও বে-ইনসাফির বিরুদ্ধে দেশের সব মানুষকে দাঁড়াতে হবে। শ্রমিকের মজুরি আন্দোলন এবং গণতন্ত্রের আন্দোলন একই সঙ্গে চালাতে হবে।’

জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এ সমাবেশ শুরু হয়। কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন রানা প্লাজার নিহত শ্রমিক আখি আক্তারের মা পোশাক শ্রমিক নাসিমা বেগম। কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক হামিদা হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআইজিডির গবেষক মাহিন সুলতান, টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু।

সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গত কয়েক মাসে জিনিসপত্রের দাম ভয়াবহরকম বেড়েছে। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কমবেশি সবার ওপরেই পড়ে। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ শ্রমজীবী। তাদের আয়ের ৮০ ভাগ ব্যয় হয় খাদ্যের পেছনে। এই খাদ্যপণ্যের দাম যখন বেড়ে যায়, তখন এরাই সবচেয়ে বিপদে পড়েন। বর্তমানে শ্রমিকরা মজুরি পান আট হাজার টাকা। মুদ্রাস্ফীতির ফলে শ্রমিকদের কেনার ক্ষমতা কমে গেছে প্রায় ৩০ ভাগ। অর্থাৎ শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি হয়ে গেছে পাঁচ হাজার টাকা। 

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, শুধু খাবার খরচ ২৫ হাজার টাকা। বাঁচার মতো মজুরি আরও বেশি। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সবার কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু রফতানিকারকদের লাভ হচ্ছে। এই লাভের অংশ কিন্তু শ্রমিকরা পান না। জিডিপি বৃদ্ধির সুফল দেশের শ্রমজীবীরা পান না।

হামিদা হোসেন বলেন, ‘নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখে আমরা জুরাইন কবরস্থানে যাই তাজরীনের অজ্ঞাতনামা শ্রমিকদের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে। এপ্রিল মাসে আমরা জুরাইনে যাই রানা প্লাজার শ্রমিকদের স্মরণ করে। অজ্ঞাতনামা শ্রমিকদের লাশ ও কবরের চিহ্ন এখন খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। সরকারের পক্ষ থেকে এই শ্রমিকদের স্মৃতিটুকু খুঁজে পাওয়া মুশকিল।’

/আরএ




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close