খালেদা-আব্বাসের বাসার সামনে পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
|
![]() এদিকে, সোমবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। রাজধানীতে খালেদা জিয়ার বাসা ও মির্জা আব্বাসের বাসার সামনে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। খোলা মাঠ ছাড়া রাস্তাঘাটে কোনো সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। সব ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলায় র্যাবও প্রস্তুত বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী ও ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে দুই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঢাকা ছাড়াও গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের জেলা ও থানা এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িতে যাচ্ছেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে ১৫ দিনব্যাপী সাড়াশি অভিযান শুরু হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. মনজুর রহমান সময়ের বলেন, রোববার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২ হাজার ২২৪টি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় নতুন করে আরও এক হাজার ৩১৯ জনকে গ্রেফতার ও ৪০৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশেষ অভিযান শুরুর পর গত দুই দিনে (শনি ও রোব) সারা দেশে ৪ হাজার ৫৪৫টি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। একইভাবে এই সময়ে সারা দেশে ২ হাজার ৬৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ এ অভিযান চলমান থাকবে। ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন, রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে রোববার সকাল থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৫৫ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে অভিযান শুরুর পর গত চারদিনে ৭২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে অনেকে পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এছাড়া মাদক, দণ্ডপ্রাপ্ত, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চোর, ছিনতাইকারীসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে নাশকতা কিংবা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিএমপির পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যেখানেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে এই বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে। খালেদা জিয়া ও মির্জা আব্বাসের বাসার সামনে পুলিশ: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ এর সামনে সড়কের দুই দিকে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে পুলিশকে পাহারা দিতে দেখা গেছে। গত শনিবার রাতে গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কে এ নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়। কেউ বাড়ির ভেতরে গেলে বা বাইরে বের হলে পুলিশ তাদের তল্লাশি করছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা কর্মীরা। তবে পুলিশ বলেছে, সন্দেহজনক কোনো গাড়ি বা পথচারী চলাচল করলে তারা তাদেরকে তল্লাশি করছেন। নিরাপত্তা চৌকিতে দায়িত্বরত গুলশান থানার এএসআই মিজানুর রহমান বলেন, সড়কের দুই পাশে মোট আটজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তারা সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সন্দেহজনক কোনো গাড়ি বা পথচারী চলাচল করলে তল্লাশি করছেন। সোমবার সকাল থেকে মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। হঠাৎ পুলিশের এই অবস্থান নিয়ে তিনি বাসায় নিরাপদ বোধ করছেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তার বাসার সামনের সড়কে পুলিশের তিনটি পিকআপ ভ্যান রাখাসহ পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, তার বাসায় প্রস্তুতি সভা ছিল। এর মধ্যে পুলিশ বাসার চারপাশে অবস্থান নেয় ও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে গত ১ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরে বিজয় দিবসসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিবসকে কেন্দ্র করে অভিযান পরিচালনা করতে চিঠি দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. হাসানুজ্জামানের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়- পুরান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম আদালত) এলাকায় পুলিশের হেফাজত থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনা, মহান বিজয় দিবস, খ্রিষ্টানদের বড়দিন ও ইংরেজি বর্ষবরণ (থার্টি ফার্স্ট নাইট) উদ্যাপন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে চলমান অভিযানের পাশাপাশি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টারসহ অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। |