১০ ডিসেম্বরে সমাবেশ: তিন স্তরের পরিকল্পনা বিএনপির
সাব্বির আহমেদ
|
![]() কারণ হিসেবে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ সময়ের আলোকে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্রাবাস। সেখানে থেকে ছাত্রলীগ হামলা চালাতে পারে আমাদের ওপর। আর এ উদ্যানে বিএনপিকে নিকট অতীতে একবারও অনুমতি দেয়নি। এখানে দুদিন পরপর সমাবেশ করতে করতে আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের মাঠ বানিয়ে ফেলেছে। তার মতে, ১০ ডিসেম্বর সরকার বড় কোনো বাধা দেবে না এবং শেষ মুহূর্তে নয়াপল্টনেই সমাবেশের অনুমতি দেবে। তবে নানাভাবে বিএনপিকে চাপে রাখবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ হবে। আল্টিমেটাম দিয়ে পরে সরকার পতনে মহাসমাবেশ করা হবে।’ একই কথা বলেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দীতে সংঘাত হতে পারে। সেখানে ছাত্রলীগের সম্মেলন আছে।’ বিএনপি সূত্র বলছে, ১০ ডিসেম্বর ঘিরে সতর্ক তারা। পা দিতে চায় না সরকারের ফাঁদে। তাই তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সোমবার সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে ঢাকার সমাবেশের সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ হোটেল লেকশোরে দেশের সবশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি। এ জন্য ঢাকায় বিদেশি সব দূতাবাসসহ জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার গণসমাবেশে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেবে বিএনপি। লংমার্চ ও রোড মার্চের মতো কর্মসূচি প্রাথমিক প্রস্তাবে রয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কারের জন্য ২৭ দফার একটি রূপরেখা তুলে ধরা হতে পারে। এদিকে কর্মসূচি সফল করতে জোরশোরে প্রস্তুতির পাশাপাশি নেতাকর্মীদের অতিউৎসাহী মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক সময়ের আলোকে জানান, ‘তারা সমাবেশ সফল করতে প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করছেন। লিফলেট ও পোস্টার বিলির কাজ চলছে পুরোদমে। তবে দেখা গেছে, এ লিফলেটে সমাবেশস্থলের নাম নেই।’ বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক আবদুস সালাম আজাদ জানান, ‘ধর্মঘটের আশঙ্কায় ইতিমধ্যে বাইরে থেকে স্বল্পহারে নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসছেন। তারা আত্মীয়স্বজনের বাসায় থাকছেন। তবে ধর্মঘটের ঘোষণা এলে গণহারে তারা ঢাকায় চলে আসবেন।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আ ন ম সাইফুল ইসলাম জানান, ‘বিএনপি সরকারের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। কৌশলে গ্রেফতার এড়িয়ে চলার চেষ্টা চলছে। তবে গ্রেফতার হলেও সমস্যা নেই। কেউ আটক হলে যাতে তিন স্তরের বিকল্প নেতৃত্ব ঠিক করা আছে।’ এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, ‘আমরা ঢাকায় ইতিহাসের সেরা জমায়েত করতে চাই। সরকারি দল নানাভাবে উসকানি ও উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বিএনপিকে ফাঁদে ফেলার কৌশল হিসেবে সরকারি দল ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বেশি তৎপর।’ সোমবার নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী ও তুরাগ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর মধ্যে অন্য জায়গা হলে আমরা চিন্তা করব।’ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহরে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘একটা সভায় সরকার পতন হবে না। সরকার কেন ভয় পায়, বুঝি না। কর্মীদের নিয়ে লিফলেট বিতরণ করতে গেলে বিএনপির ঢাকা মহানগরের নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।’ |