প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:০২ এএম (ভিজিট : ১৭১)
অভিজ্ঞ-অনভিজ্ঞদের মিশেলে দারুণ একটি দল নিয়ে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড। দুর্বার গতিতে পৌঁছে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। থ্রি লায়ন্সদের দুর্দান্ত পথচলায় অনভিজ্ঞদের দারুণ পারফরম্যান্সে আড়াল অভিজ্ঞরা। এক কথায় বলা যায়, তারুণ্যের ভেলায় ভাসছে ইংল্যান্ড।
গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যদের সবশেষ জয় এসেছে সেনেগালের বিপক্ষে। রোববার রাতে আল বায়েত স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে তারা। প্রথমার্ধে দুই গোল আসে দুই অভিজ্ঞ তারকা- জর্ডান হেন্ডারসন এবং হ্যারি কেনের চমকে। দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় গোলটি করেন ২১ বছরের তরুণ বুকায়ো সাকা। জালের দেখা না পেলেও সবার নজর কেড়েছেন আরও দুই তরুণ ফুটবলার- জুড বেলিংহাম ও ফিল ফোডেন। ২২ বছর বয়সি ফোডেনের অ্যাস্টিটেই গোলের দেখা পান কেন এবং সাকা। হেন্ডারসনকে দিয়ে গোল করান ১৯ বছর বয়সি বেলিংহাম।
শুধু এক ম্যাচেই জ্বলে ওঠেনি ইংল্যান্ডের তিন তরুণ, গ্রুপ পর্ব থেকেই অবিশ্বাস্য খেলছেন তারা। ইরানকে ৬-২ গোলে উড়িয়ে দিয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করেছে ১৯৬৬’র চ্যাম্পিয়নরা। ওই ম্যাচে দলের প্রথম গোলটি করেন বেলিংহাম। রাহিম স্টার্লিং-মার্কোস রাশফোর্ড-জ্যাক গ্রিলিশের এক গোলের বিপরীতে সাকা জালের দেখা পান দুবার। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য গোল পায়নি ইংল্যান্ডের কেউ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লড়াইটি গোলশূন্য ড্র করেছিল থ্রি লায়ন্সরা। তবে ওয়েলস ম্যাচে ঠিকই স্বরূপে ফিরে তারা। ৩-০ গোলে জিতে শেষ করে গ্রুপ পর্ব। ওই ম্যাচে জালের দেখা পান ফোডেন।
টানা তিন ম্যাচে গোল না পেলেও ফোডেন তার ফুটবল জ্ঞানে ছড়িয়েছে মুগ্ধতা। একই পৃষ্ঠায় সাকা ও বেলিংহাম। তাই তো সেনেগাল ম্যাচের পর তিন তরুণের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন সাউথগেট। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘আমাদের কিছু দুর্দান্ত তরুণ খেলোয়াড় আছে, যাদের সুযোগ দেওয়া ঠিক বলে মনে করি আমরা, বিশেষ করে রাতে জুড বেলিংহাম, ফিল ফোডেন এবং বুকায়ো সাকাকে। তারা সত্যিই ভালো দিকে যাচ্ছে এবং এই ম্যাচগুলো তাদের জন্য উজ্জ্বল জীবনের অভিজ্ঞতা।’
ইংল্যান্ডের এই ত্রয়ী কি পারফরম্যান্সের দিক থেকে প্রত্যাশার চেয়েও খুব বেশি এগিয়ে গেছে? এমন প্রশ্ন ছিল কোচের কাছে। জবাবে সাউথগেট বলেন, ‘আমি মনে করি তারা যে অগ্রগতি করছে তা অসাধারণ।’ ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আলাদা করে বেলিংহামে প্রশংসা করতে বাধ্যই হলেন ইংল্যান্ড কোচ, ‘আমি মনে করি না, আমরা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারতাম যে বেলিংহাম কত দ্রুত পরিপক্ক হতে পারে। গত পাঁচ মাসে সে অন্য লেভেলে চলে গেছে।’
সেনেগাল ম্যাচে একটি রেকর্ডও গড়েছেন বেলিংহাম। বিশ্বকাপের নক আউট ম্যাচে অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার এখন এই মিডফিল্ডার। তার রেকর্ড-গড়া পারফরম্যান্সের পর তাকে নিয়ে ফোডেন বলেছেন, ‘আমি বেলিংহামকে এখনও খুব বেশি বড় করতে চাই না, কারণ সে এখনও তরুণ কিন্তু সে আমার দেখা সবচেয়ে প্রতিভাধর খেলোয়াড়দের একজন।’ প্রশংসা বৃষ্টিতে ভিজলেও মাটিতেই পা রাখছেন বেলিংহাম এবং মেতেছেন সতীর্থদের প্রশংসায়।
কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিতের পর ইংলিশ মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘(সেনেগালের বিপক্ষে) প্রথম ৩৫ মিনিট কঠিন ছিল। তারা জড়ো হয়েছিল, যা ভেদ করা কঠিন ছিল। তাই আমাদের প্রথম গোলটি প্রয়োজন ছিল এবং তাতেই ভালো অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ ছিল। পরে প্রথম গোলটাই সত্যিই ভালো কাজ করেছিল। আমি যখন খেলি তখন সতীর্থরা ভালো পজিশনে থাকে, এটা আমার জানা। তাই আমি শুধু তাদের সামনে বল পাঠিয়ে দিই।’