প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ২:০৭ এএম (ভিজিট : ৮৪)
আজ ৮ ডিসেম্বর, বরিশালমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বরিশাল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় মুক্ত হয় শহর। নগরীর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন মুক্তিসেনারা। সর্বত্র ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বৃহত্তর বরিশালে বাঙালি হত্যা-নির্যাতনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ওয়াপদা কলোনি। গণহত্যার নীরব সাক্ষী স্থানটিকে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতেই ইতিহাসের স্বাক্ষী ধ্বংসস্তূপ ভবনগুলোকে সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বরিশালের ওয়াপদা কলোনিতে (টর্চার সেলে) টানা ১৯ দিন পাকিস্তানি হানাদারদের নির্যাতন কেন্দ্রে বন্দি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এএমজি কবীর ভুলু। সেখানে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা ও ভয়াবহ নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে এখনও কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, ওয়াপদা কলোনির একাধিক টর্চার সেলে বাঙালি নারী-পুরুষকে ধরে নিয়ে সীমাহীন নির্যাতনের পর সাগরদী খালের একটি সেতুতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। অগণিত গণহত্যার নীরব সাক্ষী এই কলোনি। কবীর ভুলু বলেন, গণহত্যার স্মারকগুলো সংরক্ষণ করায় আগামী প্রজন্ম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার ইতিহাস জানতে পারবে।
বরিশালের ওয়াপদা কলোনির টর্চার সেলে ঘুরতে আশা আগত দর্শনার্থী শরীফ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে সবার জন্য। অনেকেই ঘুরতে আসেন কিন্তু আসার পর পাল্টে যায় তার ভাবনা। ইতিহাসের এই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকেই নিজে বলে ওঠে, সত্যিই তো, রক্তে কেনা এ আমার স্বদেশ। কারও দানে পাওয়া নয়।
জানা গেছে, ২০২০ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমি সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে, স্মৃতিস্তম্ভ, বসার স্থান, প্লাজা, স্বজনদের স্মৃতিকথার গ্যালারি এবং নির্যাতনের আবহ সৃষ্টিকারী সাউন্ড সিস্টেম। সংরক্ষণ করা হয়েছে দুটি টর্চার সেল ও একটি বাংকার।