বিএনপির ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগেই পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠছে। বুধবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশর সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলাকালে একজন নিহত হয়েছেন।
সমাবেশের আগেই সংঘাত-প্রাণহানি, এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কী হবে ১০ ডিসেম্বর? বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি সদস্যরা এ নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। আগামী শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের স্থান নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে টানাপোড়ন চলছে। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশ তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি দিয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেতে নারাজ বিএনপির নেতাকর্মীরা জনসভার তিন দিন আগে নয়াপল্টনে জড়ো হলে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। নয়াপল্টন কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে চালানো আটক অভিযানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে আটক করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ কী করা সম্ভব-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করেই তো এগুলো হচ্ছে। তারা সমাবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
সরকার যদি পছন্দ অনুযায়ী বিকল্প ভেন্যু না দেয় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই আগামী ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ করবে বিএনপি। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ ঘোষণা দেন। মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি সড়কে সমাবেশ করলে জনদুর্ভোগ হয়। লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ২০ বছর ধরে বন্ধ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কও বন্ধ। এতে কী জনদুর্ভোগ হয় না?
নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি পুলিশ না দিলে কী হবে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ পুলিশের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করব। নয়াপল্টনেই সমাবেশ করব। তবে আমরা চাই, পুলিশ যেন দলীয় ভূমিকা পালন না করে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। গণসমাবেশ ঘিরে একটি রিকশার টায়ার ব্লাস্ট হলেও দায় সরকারের।
বিএনপি সূত্র বলছে, এই সংঘর্ষের প্রতিবাদে আজ সংবাদ সম্মেলন করে আগামীকাল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে দেশজুড়ে। তবে শনিবার সমাবেশ করবে তারা। সেটা নয়াপল্টনের পরিবর্তে আরামবাগের দিকে হতে পারে। তবে বিএনপি এখনই হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাবে না।
অন্যদিকে নয়াপল্টনেই বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে বিএনপি অনঢ় অবস্থায় থাকলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই বার্তা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকও।
তিনি স্পষ্ট জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর জনসভা করতে চাইলে বিএনপিকে কোনো মাঠেই যেতে হবে, সড়কে কোনো সমাবেশ করতে দেবে না পুলিশ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি যেতে না চাইলে বিকল্প হিসেবে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ, পূর্বাচলের বাণিজ্য মেলা মাঠ দেখান তিনি।