ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

ভুল-শুদ্ধ কীভাবে মূল্যায়ন করব
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৩:৩২ এএম আপডেট: ০৮.১২.২০২২ ৮:২৮ এএম  (ভিজিট : ১৫৮)
কোনো মানুষই ভুল-শুদ্ধের ঊর্ধ্বে নয়। সবার ভেতরই কম-বেশি ভুল ও ভালো আছে। মানুষ ভুল করবে-এটাই স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক কিছু নয়। পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব যিনি ছিলেন, আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.), তিনি নিজেও ভুল করেছিলেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা হজরত আদম (আ.)-কে বলেছিলেন, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং যেথা ইচ্ছা আহার করো, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়ো না, হলে তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩৫)। আল্লাহ তায়ালার এমন আদেশকে অমান্য করেই ফেললেন শয়তানের ধোঁকায় পড়ে। 

পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানব ভুল করেছেন শুধু এমনটি নয়, এখনও প্রতিনিয়ত প্রতিটি মানুষই ভুল করছে এবং সামনেও করবে। আল্লাহর কোনো হকের ক্ষেত্রে ভুল করার পর ক্ষমা চাইলে ও তওবা করলে আল্লাহ খুশি হন। তবে মানুষের ক্ষেত্রে ঘটে এক বিপত্তি। মানুষের ভুল-ভ্রান্তির মাঝখানে বেধে যায় একে অপরের বিচ্ছেদ। অনেকে ক্ষমা করতে শিখেনি, শুধু ভুল ধরতে শিখেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘যে অন্যকে ক্ষমা করে তাকেও ভালোবাসেন। যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)। অন্য একটি আয়াতেও আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো
অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৪৯)

ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তায়ালা অনেক বেশি ভালোবাসেন এবং আল্লাহ তায়ালা তাকে পুরস্কার দেবেন। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না’ (সুরা শুরা : আয়াত ৪০)। ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা-সম্মান কমে না বরং আরও বৃদ্ধি পায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’ (মুসলিম : হাদিস ২৫৮৮)

একজন মুমিন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, অবশ্যই সে সহিষ্ণুতা ধারণ করে থাকবে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তা বহাল থাকবে। আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন সাহাবি মুয়াজ  (রা.) ও মুসা (রা.)-কে ইয়েমেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন, ‘লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না’ (বুখারি : হাদিস ৩০৩৮)। আসুন সমাজটাকে আমরা ছিন্নভিন্ন না করি। সবাই মিলেমিশে চলাফেরা করি। অন্যের ভুলগুলো শুধরে দেওয়ার নিয়তে যেন প্রকাশ করতে পারি তাদের মাঝে। মানুষের ভুল নয়, ভালোটা যেন চর্চা করতে পারি। আল্লাহ তওফিক দিন।


আরও সংবাদ   বিষয়:  ভুল-শুদ্ধ  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close