প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৩ এএম (ভিজিট : ১৩২)
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্য লেদার। লেদার শিল্পের উন্নয়ন ও রফতানি বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে লেদার খাতের রফতানি এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, আগামী ২০৩০ সালে এ রফতানির হতে পারে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। লেদার পণ্যের মান রফতানি বাজারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাঁচামাল এবং দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে আমরা লেদার শিল্পকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারি। আন্তর্জাতিক বাজারে লেদার পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বুধবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধায় এক্সপো জোনে লেদার গুডস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘লেদারটেক-২০২২’-এর উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। অনেকগুলোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে এগুলোতে অতি সহজেই লেদার শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব। ইতিমধ্যে বিনিয়োগের জন্য অনেক দেশ এগিয়ে এসেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আরও প্রয়োজন। বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। দেশের দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থান হবে। এ শিল্পকে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার ঢাকার হাজারীবাগ থেকে লেদার শিল্প-কলকারখানা সাভার ট্যানারিতে স্থানান্তর করেছে। এখন সেখানে উন্নত পরিবেশে আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় লেদার শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তখন বাংলাদেশের জন্য এলডিসিভুক্ত দেশের সুযোগ-সুবিধা থাকবে না। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করেই এগিয়ে যেতে হবে। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ভিয়েতনাম ও চায়নার মতো দেশগুলো থেকে লেদার শিল্প স্থানান্তর করা হচ্ছে। বাংলাদেশে জন্য এটা সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করে লেদার শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ধরনের শিল্প উন্নয়নে সহায়তা দিচ্ছে। সরকারও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে।
লেদার গুডস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, ভারতের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্টসের সদস্য ভিপেন কুমার সেথ, ভারতের ফুটওয়্যার কমপোনেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের ম্যানেজিং কমিটি মেম্বার ইরিক ইলিং, এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রা. লিমিটেডের পরিচালক নন্দগোপাল। অনুষ্ঠানে ভোট অব থ্যাংকস প্রদান করেন এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রা. লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া।
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়া শিল্পে বিশ্বের যত আধুনিক প্রযুক্তি আছে তা বাংলাদেশে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য থেকে এ প্রদর্শনীর আয়োজন। এর ফলে যারা রফতানিকারক আছে তাদের সক্ষমতা বাড়বে আর নতুন যারা এ সেক্টরে আসতে চাচ্ছেন তারা এক ছাদের নিচে এ সেক্টরের সব তথ্য পাবেন। চামড়া শিল্পকে যদি আরও শক্তিশালী করতে হয় তাহলে সাপ্লাই চেইনদের দেশে আনতে হবে। কাঁচামালগুলো হয় তারা স্টক করবে অথবা ভবিষ্যতে দেশে উৎপাদন করবে। তাহলে আমরা বিশ্বে ভালো অবস্থানে থাকতে পারব।
তিনি বলেন, চায়না ও ভিয়েতনামে করোনার লকডাউনের কারণে তাদের মার্কেট বন্ধ। তাই বিশ্বের নামিদামি বায়ারদের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। যা আমাদের এ লেদার সেক্টরকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলবে। এখনই বাংলাদেশের সময় চামড়া শিল্পকে আরও উন্নত মানের করা। পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানো। আমরা সস্তা প্রোডাকশন চাই না, ভালো মানের প্রোডাক্ট চাই।
তিন দিনব্যাপী এ ট্রেড শোতে ১০ দেশের ২০০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং ফুটওয়্যার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারি, কম্পোনেন্ট, কেমিক্যাল এবং অ্যাক্সেসরিজ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়। আজ থেকে শুরু হওয়া এ এক্সপো চলবে আগামীকাল পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।