ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৭ আশ্বিন ১৪৩০
ই-পেপার শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
https://www.shomoyeralo.com/ad/Amin-Mohammad-City-(Online).jpg

https://www.shomoyeralo.com/ad/SA-Live-Update.jpg
শীত কেন আসে!
জহিরুল ইসলাম
প্রকাশ: শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ  Count : 715

এক দেশে ছিল এক কৃপণ লোক। সে শুধু টাকা জমাত। আমরা জানি যে, কৃপণ আর মিতব্যয়ী এক জিনিস নয়। মিতব্যয়ীরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করে না, কিন্তু
কৃপণরা প্রয়োজনের জিনিসটাও কেনে না পয়সা খরচ হওয়ার ভয়ে। তো এই ব্যক্তিটি ছিল কৃপণ।

একবার সে দেশে অনেক শীত পড়ল। কিন্তু কৃপণ লোকটির ঘরে কোনো শীতের কাপড় ছিল না। এমনকি রাতে ঘুমানোর জন্য কোনো লেপ বা কম্বলও ছিল না। পরপর বেশ কয়েক দিন অনেক শীত পড়ল। দিনের বেলায় কুয়াশার কারণে সূর্য পর্যন্ত দেখা যেত না। আর রাতে হাড়-কাঁপানো শীত পড়ত। বাড়িতে যত পুরোনো কাপড়চোপড় ছিল সব গায়ে দিয়েও বেচারা ঠান্ডার কারণে ঘুমাতে পারল না। শেষমেশ উপায় না পেয়ে সে একটা কম্বল কিনবে বলে ঠিক করল। একদিন সকালবেলা জমানো টাকা থেকে অল্প কিছু টাকা নিয়ে বাজারে গেল। বেশ কয়েক দোকান ঘুরে ঘুরে, অনেক দামাদামি করে অল্প টাকায় বেশ মোটা দেখে একটা কম্বল কিনে ফেলল সে।

ঠিক সে দিনই আকাশে উঁকি দিল সূর্য। রোদের দাপটে কুয়াশা-টুয়াশা সব উধাও হয়ে গেল।

রাতে খুশি খুশি মনে শুতে গেল কৃপণ লোকটি। বেশ কয়েক রাত ধরে শীতের কারণে ঘুমাতে পারছিল না সে, আজ আরামে একটা ঘুম দেবে- এই ভেবে নতুন কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল। কিন্তু কোথায় শীত! মোটা কম্বলের কারণে গরমে অস্থির হয়ে উঠল সে। পরদিন সকালে সে প্রতিবেশীদের সঙ্গে গল্প করতে করতে বলল, অনেকগুলো টাকা জলে গেল। এত টাকায় কেনা কম্বলটা গত রাতে কোনো কাজেই লাগল না! 

প্রতিবেশীরা বলল, সময়ের কাজ সময়ে না করলে এমনই হয়। ওপরের ঘটনাটা আসলে একটা গল্প। কিন্তু শীত আর গরমের এমন ব্যাপার তো পৃথিবীতে আসলেই ঘটে। বছরের একটা সময় প্রচ- গরম আর অন্য সময় প্রচ- শীত পড়ে। আবার এক দেশে শীতকাল তো অন্য দেশে গরম কাল। কিন্তু কেন এমন ঘটে?

আমরা জানি, পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণে দিন ও রাত হয়। আর বার্ষিক গতির কারণে বছর ঘুরে আসে। শীতকাল ও গরম কালের পার্থক্য নির্ভর করে পৃথিবীর বার্ষিক গতির ওপর। আহ্নিক গতি মানে পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘোরা। আর বার্ষিক গতির মানে হলো, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষ পথে ঘোরা। সূর্যের চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ কখনো সূর্যের কাছে চলে যায়, আবার কখনো উত্তর গোলার্ধ কাছে চলে যায়।

পৃথিবীর একটা অংশ সূর্যের কাছে থাকা মানে তার উল্টো দিকের অংশটা থাকে সূর্য থেকে দূরে। সূর্য থেকে দূরে থাকা অংশটা কম আলো আর কম তাপ পায়। ফলে ওই অংশের তাপমাত্রা কমে যায়। তখন সেই অংশে থাকে শীতকাল।

এ ছাড়া শীতকালে সূর্য থেকে দূরে থাকা অংশে সূর্যের আলো বাঁকা বা তির্যকভাবে পড়ে। আর এই আলো চারদিকে ছড়িয়েও পড়ে বেশি। আবার শীতকালে দিন ছোট ও রাত বড় হয়। সব মিলিয়ে পৃথিবীর ওই অংশ তাপমাত্রা যথেষ্ট বাড়ার মতো সূর্যের আলো ও তাপ পায় না। তাই সেখানে তাপমাত্রা গরম কালের তুলনায় বেশ কমে যায়।

এর ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটে গরম কালে। পৃথিবীর যে অংশ সূর্যের কাছাকাছি থাকে সে অংশে দিন বড় এবং রাত ছোট হয়। এ ছাড়া ওই অংশে তখন সূর্যের আলো খাড়াখাড়িভাবে পড়ে। সব মিলিয়ে ওই অংশটি তখন উত্তপ্ত হওয়ার মতো যথেষ্ট সূর্যের আলো ও তাপ পায়। তাই ওই অংশে তখন গরম কাল হয়।

আমাদের দেশ বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে। নিরক্ষরেখার উত্তর দিকে অবস্থিত অঞ্চলকে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ আর দক্ষিণ দিকে অবস্থিত অঞ্চলকে দক্ষিণ গোলার্ধ বলে। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসে এই গোলার্ধে শীত বেশি পড়ে আর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেশি গরম পড়ে। বাকি সময়টা এ অঞ্চল নাতিশীতোষ্ণ থাকে। নাতিশীতোষ্ণ মানে হলো- না অতি শীত না অতি উষ্ণ, মানে বেশি শীতও না বেশি গরমও না।

অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে ডিসেম্বর হতে মার্চ মাস পর্যন্ত বেশি গরম এবং জুন হতে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত শীত পড়ে। তবে অবস্থানগত কারণে উত্তর গোলার্ধের সব অঞ্চলে সমান গরম বা সমান শীত পড়ে না।




https://www.shomoyeralo.com/ad/Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com