ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

কুলচাষে স্বাবলম্বী লোহাগড়ার আজিজুল
প্রকাশ: শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১০:৩১ এএম  (ভিজিট : ১৪৭)
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি খুঁজছিলেন। চাকরি হচ্ছিল না তার। কিন্তু চাকরি না পেলেই তো আর জীবন থেমে থাকে না। বেকারত্ব থেকে মুক্তির পথ তো আর ছেলের হাতের মোয়া নয়। তবু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের দুঃখী দিনগুলোয় সঙ্গী ছিল পোষা পায়রা। একদিন ইউটিউবে চোখে পড়ল একটি কৃষি অনুষ্ঠান। সেখানে কুল চাষের ভিডিও দেখে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। 

আগুপাছ কিছু না ভেবেই কুলের চারা কিনে ফেলার ব্যাপারে মনস্থির করলেন তিনি। কয়েক জোড়া পোষা পায়রা বিক্রি করে দিলেন। যশোর ঝুমঝুমপুর থেকে কেনেন একশ বাউকুলের চারা। সেটি ছিল ২০১৬ সালের কথা। মেঘে মেঘে অনেক বেলা গড়িয়ে সেই বাউকুলের চারাই তাকে দিয়েছে স্বনির্ভরতার সম্মানিত জীবন। গল্পটি নড়াইলের লোহাগড়ার ছেলে আজিজুল ইসলামের। কৃষিকাজের মাধ্যমে অকর্মণ্য বেকার থেকে হয়ে উঠেছেন স্থানীয়দের রোল মডেল। 

আজিজুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার রাজুপুর গ্রামের মো. ওলিয়ার খালাসির ছেলে। ২০-৪০ টাকা করে কেনা এক একটি বাউকুল চারা এখন নিয়মিত ফলন দিচ্ছে তার বাগানে। শুরুতে বাগানের আয়তন মাত্র ১৮ শতাংশ জমিতে হলেও এর ব্যাপ্তি এখন বেড়েছে। একটু একটু করে প্রায় প্রতিবছরই বাড়াচ্ছেন জমির পরিমাণ। সঠিক পরিচর্যায় ভালো ফলন হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন প্রতিবছর। বর্তমানে তার কুলবাগানে বলসুন্দরী, থাই আপেলকুল, টকমিষ্টি বাউকুল জাতের প্রায় ৭০০ চারা রয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কুলের ফলনও হয়েছে ভালো। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি কুল ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব কুলের স্বাদ যেমন ভালো, তেমন চাহিদাও বেশি। 

আজিজুলের কুলচাষের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এই আপেলকুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকায় কৃষি উদ্যোক্তা থেকে হয়ে উঠেছেন কৃষি পরামর্শক। প্রতিদিন বেকার যুবকরা এসে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। 

আজিজুল ইসলাম বলেন, ১২০ শতক জমিতে বলসুন্দরী, থাই আপেল, টকমিষ্টি কুল জাতের চারা লাগিয়েছি। এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রায় ২০ কেজি করে কুল ধরেছে। বাজারে চাহিদার পাশাপাশি দামও ভালো। আশা করছি এ বছর সব খরচ-খরচা বাদ দিয়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে। 

কুলচাষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির পায়রা, হাঁস-মুরগি পালন করছেন আজিজুল। তিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বেকার তরুণদের উদ্দেশে বলেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে সঠিক গাইডলাইন নিয়ে কুল চাষ করে স্বাবলম¦ী হওয়া সম্ভব। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, লোহাগড়া উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উপজেলায় কুলচাাষিরা বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করে থাকে। কুলচাষে কুলের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। কুলচাষের পরপরই আক্রান্ত শাখা-প্রশাখাগুলো কেটে দেওয়া দরকার। এতে পরবর্তী সময়ে নতুন শাখায় যে কুল আসে সেখানে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয় এবং ফলন ভালো হয়। কৃষি অফিস থেকে কুলচাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।  




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close