ভোলায় আরও গ্যাসের সন্ধান, জীবন পাল্টে যাওয়ার স্বপ্ন চরপাতা গ্রামবাসীর
আফজাল হোসেন, ভোলা
|
![]() গত বছর ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ভোলা নর্থ-২-এর কূপ খনন শুরু হয়। ৩ হাজার ৪২৮ মিটার গভীরতায় সফলভাবে কূপ খনন শেষ হয় ১৭ জানুয়ারি। সোমবার নতুন এই কূপে গ্যাস পাওয়া যায়। বাপেক্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ কূপ থেকে প্রতিদিন উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ হবে ২০-২২ মিলিয়ন ঘনফুট। মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নতুন এই কূপের প্রজ্বলিত আগুনের শিখা দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। তাদের সবার চোখেমুখে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, নতুন এই গ্যাসকূপের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে। গ্যাসকূপকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় শিল্প ও কলকারখানা গড়ে উঠলে স্থানীয় লোকজনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। প্রায় ৩ হাজার ৪০০ মিটার পর্যন্ত খনন করার পর গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের মো. কামাল একজন ব্যবসায়ী। এলাকায় গ্যাস পাওয়ার খবরে ভোলা শহর থেকে দ্রুত এলাকায় চলে আসেন এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগুন প্রজ্বালন দেখেন। তিনি এলাকার উন্নয়ন হবে এই আশায় বুক বেঁধে আছেন। ভোলায় এখন পর্যন্ত আটটি কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া গ্রামে প্রথমবারের মতো শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়। এরপর বাপেক্স সেখানে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি কূপ খনন করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের দিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গ্যাসের সন্ধানে ভূতাত্ত্বিক জরিপ চালানো হয়। তখন তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান বাপেক্স কর্মকর্তারা। ভোলা নর্থ-২ কূপটি খননের জন্য বাপেক্স বাৎসরিক নগদ লগ্নির ভিত্তিতে চার থেকে পাঁচ মাস আগে ছয় একর জমি অধিগ্রহণ করে। ৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে খননের কাজ শুরু করে। প্রায় ৩ হাজার ৪০০ মিটার পর্যন্ত খনন করার পর সেখানে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। চলতি আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি কূপটি বাপেক্সের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্স। এ জরিপ কাজে ব্যয় হবে ২৬৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী অর্থবছরের অক্টোবর থেকে সিসমেক সার্ভের (ভূতাত্ত্বিক জরিপ) কাজ শুরু হবে। এতে জ্বালানি খাতে নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা এখন আরও অনুসন্ধান কাজে গুরুত্ব দেব। যত বেশি অনুসন্ধান হবে তত বেশিই আমাদের জন্য ভালো হবে। নতুন কূপে ৬২০বিসিএফ ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে বলে ধারণা এই কর্মকর্তার। |