ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সৈয়দপুরে অব্যাহত লোডশেডিংয়ে বিপর্যয়ের মুখে শিল্প কারখানা
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:১৯ এএম  (ভিজিট : ১৬৪)
গত সপ্তাহ থেকে দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না শিল্প শহর সৈয়দপুরে। এতে বিপাকে পড়েছেন এখানকার ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী শিল্প মালিকরা। বিদ্যুৎ না থাকায় এসব শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ না থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরীসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় এক হাজার শিল্পকারখানা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হালকা প্রকৌশল কারখানা, রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টসসহ ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। কারখানাগুলোর হালকা প্রকৌশল শিল্পপণ্যসহ উৎপাদিত বহু পণ্য যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এ ছাড়া এখানকার তৈরি গার্মেন্টসপণ্য রফতানি হয় ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে। এসব শিল্প কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অধিকাংশ শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
 
তথ্য মতে, শহরের শহিদ জহুরুল হক সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, টার্মিনাল, আতিয়ার কলোনি, বাঁশবাড়ী মুন্সিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় ২০০ রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা, হালকা প্রকৌশল কারখানা, কিছু মাঝারি ও ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। দিনের বেশিরভাগ সময় সেগুলোতে নেই কোনো মেশিনের আওয়াজ, নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য। কারখানার উৎপাদন কার্যত বন্ধ থাকছে। শ্রমিক-কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

শিল্প কারখানার মালিকরা জানান, তাদের এলাকায় দিনের বেলায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। ঠিকমতো কারখানা চালাতে না পারায় কর্মীদের বেতন ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে।

শহিদ জহুরুল হক সড়কের হালকা প্রকৌশল শিল্প কারখানার মালিক লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘আমার কারখানা খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এই ৯ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ থেকে ছয় বার লোডশেডিং হচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আমার মূল্যবান একটি মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। তাই কারখানা আপাতত বন্ধ রেখেছি।

ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা এম আর ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারি ও সৈয়দপুর রফতানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান দুলু জানান, ভারতে তার তিন লাখ ডলারের পোশাক রফতানির চুক্তি রয়েছে। কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় ঠিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে না। এতে সময়মতো পোশাক ডেলিভারি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা বসে থাকলেও তাদের বেতন ঠিকই দিতে হচ্ছে। 

বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক ও সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু জানান, সৈয়দপুরে ৩০০টি হালকা প্রকৌশল শিল্প কারখানা রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা দেশব্যাপী। তবে চলমান লোডশেডিংয়ে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কারখানায় উৎপাদন ঠিক রাখতে জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। 

সৈয়দপুরে অব্যাহত লোডশেডিং সম্পর্কে নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) সৈয়দপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সৈয়দপুরে ৪৮ হাজার বাণিজ্যিক ও আবাসিক গ্রাহকের ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে মিলছে মাত্র ১২ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সেনানিবাস, বিমানবন্দর ও রেলওয়ে কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে প্রয়োজন হয় ৩ মেগাওয়াট। তাই চাহিদার চেয়ে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্ট হয়েছে।



আরও সংবাদ   বিষয়:  সৈয়দপুর   শিল্প কারখানা  




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close