ই-পেপার বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রংপুরে আওয়ামী লীগে বিভক্তি; মাঠ গোছাতে মরিয়া জাপা ও বিএনপি
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:৪৮ এএম  (ভিজিট : ২০৯)
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় শুরু হয়েছে নির্বাচনি হিসাব-নিকাশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রংপুর-২৩, মিঠাপুকুর-৫ আসনেও বেজে উঠেছে আগাম ভোটের ডামাডোল। আসছে সংসদ নির্বাচনে কে হচ্ছেন প্রার্থী আর কে বা দলীয় মনোনয়ন পাবেন এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সচেতন মহলে। 

মিঠাপুকুর-৫ সংসদীয় এই আসনটি পরপর ৩ বার দখলে রেখেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এবারও এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে দুজন। তারা হলে-ক্ষমতাসীন এমপি এইচএন আশিকুর রহমান ও মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার। উভয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান দিচ্ছেন। অপরদিকে একসময়ে জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত জাপাও চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। ছাড় দিতে চায় না বিএনপি এবং কৌশলে জামায়াতও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এমন খবর শোনা যাচ্ছে কোথাও কোথাও।  

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপিকে নিয়ে এখন থেকেই মানুষের মুখে আলোচনা হচ্ছে নির্বাচন ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে। কোন প্রার্থী ভালো, কে সরকারের বরাদ্দ লুটপাট করেছে, কে এলাকার মানুষের পাশে থেকে দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে কাজ করছে, কারা তৃণমূল নেতাদের বঞ্চিত করে দলকে আত্মীকরণ করেছে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদ থেকে শুরু করে উপজেলা সদরের চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁ, রিকশা স্ট্যান্ডসহ হাটে-বাজারে এমন আলোচনাই ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মুখে মুখে।

তবে সব ছাপিয়ে মিঠাপুকুর-৫ আসনে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির মধ্যে। ছোট করে দেখার সুযোগ নেই জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীকেও। কারণ সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মিঠাপুকুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছিল। উপজেলার ১৭ ইউপির মধ্যে ৩টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করেন। বাকি ১৪টি ইউপির মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সর্বোচ্চ ৭টি ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিতরা জয়লাভ করেন। বাকি ৪টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং ৩টি ইউনিয়নে বিএনপির নেতা জয়লাভ করেন।

এদিকে গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এইচ এন আশিকুর রহমান মিঠাপুকুর উপজেলা শাসন করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে হতাশা। বেকার সমস্যা সমাধানে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়া। গ্রামের রাস্তাঘাট নির্মাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়াসহ ছোটখাটো ব্যর্থতাগুলোকেই এখন বড় করে দেখছেন এখানকার সাধারণ ভোটাররা। এ ছাড়াও ক্ষমতাসীন এমপি এইচ এন আশিকুর রহমান ও মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারকে ঘিরে দলীয় গ্রুপিং-দ্বন্দ্বের কারণে

তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি বাড়ছেই। আওয়ামী লীগ দলের হয়েও একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান পৃথকভাবে দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচি পালন করায় নেতাকর্মীদের মাঝে বিভেদের দেয়াল তৈরি হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান এমপি বলেন, মিঠাপুকুর উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলেই এখানে আওয়ামী লীগের ভালো অবস্থান তৈরি হয়েছে। সময়ে সবকিছু নির্ধারণ হওয়ার সঙ্গে স্পষ্ট হবে।
 
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার বলেন, মিঠাপুকুরের জনগণ আমাদের পক্ষে আছে, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা আছে। এখন দলের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।

বসে নেই জাতীয় পার্টি। তারাও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান দিচ্ছে। একসময়ে জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই আসনটিতে বর্তমানে বেহাল দশায় থাকা জাপাও চায় নিজেদের গুছিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকতে। শোনা যাচ্ছে দলীয় মনোনয়ন পেলে উপজেলা জাপার আহ্বায়ক মেজবাহুল ইসলাম মিলন চৌধুরী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ ছাড়াও আলোচনায় রয়েছে বিএনপির উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম রব্বানি ও সাজেদুর রহমান। তবে কেউ কেউ বলছেন এ আসনে জামায়াত প্রার্থী দিতে পারে।

মিঠাপুকুর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহুল ইসলাম মিলন চৌধুরী বলেন, মিঠাপুকুর জাতীয় পার্টির দুর্গ ছিল এখনও আছে। একক নির্বাচনের জন্য জাতীয় পার্টির প্রস্তুতি রয়েছে।

মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী বলেন, মিঠাপুকুরে বিএনপির মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত মতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চলছে। সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট দিতে চায়।


আরও সংবাদ   বিষয়:  রংপুর   আওয়ামী লীগে বিভক্তি  




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close