প্রকাশ: সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:৫১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 195
করোনায় আক্রান্তদের ১২ শতাংশ ডিপ্রেশনে (বিষণ্নতা) ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, করোনায় বাংলাদেশে পেশাজীবীদের মাঝে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ছাড়াও কোভিড আক্রান্ত চিকিৎসকদের শতকরা ৪০ ভাগ চিকিৎসক এবং শতকরা ৩৪ ভাগ নার্সেরা লং কোভিডে ভুগছেন। করোনায় যাদের ডায়াবেটিস ছিল না তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। করোনায় অনেকের মায়োপ্যাথি হয়েছে। তাদের এ অবস্থা থেকে চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
সোমবার বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিলন হলে করোনার দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব নিয়ে ‘ মাল্টিটিউড অব ইস্যুস ইন কোভিড: রেনাল, কার্ডিয়াক এন্ড মেটাবোলিক ইনফ্লুয়েন্স’ ও ‘লং টার্ম হেলথ কনসিকোয়েন্সেস অ্যাস এ পোস্ট কোভিড-১৯ সিকোয়াল ইন হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে উপাচার্য এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কিডনি ডিজিজ রিসার্চ গ্রুপ’।
সিম্পোজিয়ামে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু সালেহ আহমেদ, বার্ডেমের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কনসালট্যান্ট ডা. মীর ইসারাকুজ্জামান একটি করে গবেষণা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে গবেষণা ফল প্রকাশ করেন অধ্যাপক ডা. মাসুদ ইকবাল।
অনুষ্ঠানের বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ৮শ ৪ জন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর একটি প্রাথমিক গবেষণা পরিচালিত হয়। করোনা অতিমারী পুরো বিশ্বকে পাল্টে দিয়েছে। কিডনি রোগীদের করোনা হলে ফলাফল অত্যন্ত খারাপ। ডায়ালাইসিসের রোগীদের করোনা হলে শতকরা ৫০ ভাগ রোগী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে ১০ গুণ বেশী। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের রোগীদের করোনা হওয়ার ঝুঁকি অনেক থাকে। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ। করোনার টিকার কার্যকারিতা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের অনেক কম। করোনার টিকা ডায়ালাইসিস রোগীদের কার্যকারিতা শতকরা ৮৭ ভাগ।
এতে আরও জানানো হয়, ডায়াবেটিস, ও জনাধিক্য, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘ মেয়াদী অসংক্রামক রোগ, অন্যদিকে কোভিড নিউমোনিয়া, একটি সংক্রামক রোগ। কোভিড হলে এই দুই ধরণের রোগের কিছু জটিলতা দেখা যায় এবং একটি রোগের দ¦ারা অন্যটি প্রভাবিত হয়। তাই কোভিড নিউমোনিয়া হলে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ঠিক অপর দিকে যাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের কোভিড জটিলতাও বেশী হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সকল কোভিড আক্রান্ত রোগীর মাঝে শতকরা ১০ ভাগের ডায়াবেটিস আছে এবং এদের শতকরা ১৫ ভাগের চিকিৎসাধীন থাকার প্রয়োজন হয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে কোভিড টিকা গ্রহণের মাধ্যমে কোভিড জটিলতা প্রতিরোধ অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
অনুষ্ঠানে এ গবেষণার প্রধান গবেষক ও উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল চিকিৎসকদের গবেষণার কাজ করতে হবে। একবার গবেষণার কাজ করলেই হবে না। ধারাবাহিকভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।
/এমএইচ/