এবারের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা আখতারের তৃতীয় ও দ্বিতীয় কবিতার বই "যাপিত জীবনের পদাবলি"। এটি দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ পেয়েছে। মেলার ৪১৭,৪১৮,৪১৯ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।
বই নিয়ে লেখিকা জানান, কবিতাগুলো সহজ,সরল ভাষায় লেখা। দুর্বোধ্য শব্দ চয়ন করিনি। আমাদের জীবন যাপনের কথাগুলো, আমাদের চারপাশের সমাজের চিত্র এঁকেছি কলমের তুলিতে। কখনো আপনার কথা,কখনো তার কথা, কখনো আমার কথা এখানে আছে।
তিনি বলেন, লেখার যেন কিছু ভালো উদ্দেশ্য থাকে এমন ভাবনা নিয়েও লিখেছি কিছু কবিতা। মানুষের বুকের ভেতর ক্ষোভ, কষ্ট, আনন্দ, বেদনার কাব্য " যাপিত জীবনের পদাবলি"। অস্থির, অমানবিক সমাজের নিষ্ঠুর, মুখোশ পরা মানুষের কথা লিখতে দ্বিধা করিনি বইটিতে। সবকিছুর মাঝে আছে নারীর জন্য বেশ কয়েকটি পাতা। নারীর সংগ্রাম, পরাজয়, বিজয় গাঁথা যেমন উঠে এসছে কবিতায় তেমনি এসেছে নারীর জন্য। যাপিত জীবনে মানুষ একা নয়। সেই জীবনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে অসংখ্য উপাদান । সেক্ষেত্রে আশেপাশের মানুষ, সমাজ, পরিবেশ এই সবকিছু নিয়ে তার জগত। সেই জগতে মানুষের আছে উত্থান- পতন, আছে পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রেম, ভালোবাসা ও বিরহ। আছে হিংসা, লোভ, ক্ষোভ, বিশ্বাস, অবিশ্বাস। জীবনের সুখ, দুঃখ, জয়, পরাজয় এসব তো আছেই। এই সবকিছু নিয়ে এবং সমাজের নানান শ্রেণির মানুষের জীবনের বিভিন্ন ধাপের, বিভিন্ন খাঁজের চিত্রগুলো উঠে এসেছে লেখকের পদাবলিতে।
এখানে লেখকের মূল বিষয় মানুষ, মানুষের মন, সামাজিক অসঙ্গতি, অনাচার ও প্রকৃতি। সর্বোপরি কবি সমাজ সচেতনতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন কবিতার মাধ্যমে।
ছদ্ম নামের (পারমিতা নক্ষত্র) খোলস ছেড়ে এবার স্বনামে আত্মপ্রকাশ লোপা ফাহমিদার । ঢাকায় সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করছেন তিনি। তারা জন্ম যশোরে। শৈশবের শুরুতে কুষ্টিয়া, দু'তিন বছর চট্টগ্রামে। তারপর ঢাকায় বেড়ে ওঠা। শেরে বাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা থেকে যথাক্রমে এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক(সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। এরপর এম.ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন সেখান থেকেই। গবেষণার অভিসন্দর্ভ: “বাংলাদেশে নারী আন্দোলন ও নারী সংগঠন: একটি মূল্যায়ন”।
শৈশবেই লেখালেখির চর্চা শুরু। শিশু, নবারুণ, ইত্তেফাক, সাপ্তাহিক ২০০০, অনন্যাসহ অন্যান্য পত্রিকায় তাঁর লেখা ছাপা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ ও গ্রুপের সংকলনে তার লেখা ছাপা হয়। ২০০২ সালে ফিলিপস-সাপ্তাহিক ২০০০ কর্তৃক আয়োজিত গল্প-লেখা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৭ সালে ভোরের শিশির কর্তৃক আয়োজিত সৃজনশীল লেখার উপর কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। ২০০৮ সালে “আগুন-জলে নারী” নামের ছোট গল্পের বই ও ২০১৮ সালে কবিতার বই “ভালোবাসা কাব্য ও কথায়-১” প্রকাশ করেন । তিনি গান লিখেছেন। তাঁর লেখা গান সিডি আকারে বের হয়েছে। লেখক মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের একজন সদস্য । তার সংসার-সঙ্গী বি.সি.এস ক্যাডার কর্মকর্তা। সন্তান একজন ।
শখ: বই পড়া, বাগান করা, ফটোগ্রাফি ও লেখালেখি করা।
লেখালেখির মূল বিষয়: মানুষ, মানুষের মন, সামাজিক অসঙ্গতি ও সামাজিক সচেতনতা এবং প্রকৃতি ।