প্রকাশ: বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩, ২:২৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 89
যৌন হয়রানি এবং কলেজছাত্রীর বাবা-চাচাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার মামলায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে ফরিদপুর র্যাব-৮।
ফরিদপুর র্যাব-৮-এর কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার কেএম শাইখ আকতার রায় মোহনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সোমবার রাত ৮টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই রাতেই রায় মোহনকে ফরিদপুরের সালথা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সালথা থানার ওসি শেখ মো. সাদিক জানান, গ্রেফতার হওয়া ছাত্রলীগ নেতা রায় মোহনের সঙ্গে একটি মেয়ের চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত দুই মাস ধরে তাদের সম্পর্ক ব্রেকআপ হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১০ মার্চ দুই পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে সালিশ করে। সেই সালিশে উভয়ের লোকজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সালথা থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৮।
গত ১০ মার্চ সালথায় যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় কলেজ ছাত্রীর বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ফরিদপুরের একটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের যৌন হয়রানির শিকার ওই তরুণী।
যৌন হয়রানির শিকার কলেজছাত্রী জানান, রায় মোহন তাকে স্কুলে পড়াকালীন থেকেই বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়। মাঝে কয়েক দিন তাকে বিরক্ত না করলেও ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার পরেই সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রতিনিয়ত তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তাকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও দলবল নিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করত মোহন।
সম্প্রতি রায় মোহন রাস্তায় জোরপূর্বক তার হাত ধরে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে সে বাধা দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় তার বাবা-চাচাসহ স্বজনেরা এগিয়ে এলে রায় মোহনের সঙ্গে থাকা লোকজন তাদের মারধর করে জখম করে।
এ ঘটনার পর তার কলেজ যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে সে বাড়িতেই থাকছেন বলে জানান। ভুক্তভোগী ছাত্রীটি জানান, সেসহ তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে ছাত্রলীগ নেতা রায় মোহন রায়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।